ভারত-পাকিস্তানের নালিশ-বদল
এশিয়া কাপে মাঠে যেমন উত্তেজনা, মাঠের বাইরে ততটাই উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড এবার আইসিসির দ্বারস্থ হয়েছেন একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের মাধ্যমে।
বিসিসিআই আইসিসি-র কাছে নালিশ করেছে পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটার—রউফ এবং ফারহানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সুপার ফোরের ম্যাচে তারা অশোভন উল্লাস করেছেন। ফারহানের ‘একে৪৭ সেলিব্রেশন’ এবং রউফের ‘প্লেন ক্র্যাশ’ ইশারা ভারতীয় পক্ষের নজরে এসেছে। আইসিসি-র এলিট প্যানেলের রেফারি রিচি রিচার্ডসনের সামনে যদি পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা অভিযোগ অস্বীকার করেন, তবে তাদের প্রশ্নোত্তর দিতে হবে।
পাল্টা কায়দায় পাকিস্তানও নালিশ করেছে সূর্যকুমার যাদবের বিরুদ্ধে। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে হারানোর পর ভারতীয় অধিনায়ক তার জয়ের মুহূর্তে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কুর্নিশ করেছেন। পাকিস্তান মনে করছে, এই মন্তব্য রাজনৈতিক এবং আইসিসি-র নজরে এনে শাস্তি চাওয়া উচিত। যদিও ঘটনার সাত দিনের মধ্যে অভিযোগ জানাতে হয়, সূর্যকুমারের ক্ষেত্রে সেই সময়সীমা অতিক্রম করেছে। তাই রিচার্ডসনই সিদ্ধান্ত দেবেন, তার বক্তব্য শাস্তিযোগ্য কিনা।
রউফের বিরুদ্ধে অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ভারতের ইনিংস চলাকালীন তার ফিল্ডিং অবস্থান। গ্যালারিতে বসা ভারতীয় সমর্থকরা ‘কোহলি, কোহলি’ চিৎকার করলে রউফের ইশারা ‘প্লেন ক্র্যাশ’-এর মতো ধাঁচে করা হয়। এছাড়াও, সঞ্জু স্যামসনকে আউট করার সময় একই ধরণের ইশারা পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে।
ফারহানের উচ্ছ্বাসও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। পাকিস্তানের হয়ে শুরুতে দাপট দেখানো ফারহান অক্ষর পটেলের একটি বল মিড উইকেটে খেলেই অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। তখন তিনি ব্যাটের হাতল কাঁধের কাছে রেখে ‘একে৪৭ সেলিব্রেশন’ করেছেন। ফারহান বলেন, “ওটা মুহূর্তের উদ্ভাবনা। অর্ধশতরানের পর সাধারণত আমি খুব উল্লাস করি না, কিন্তু তখন মনে হলো, তাই করেছি। এটি কেউ কিভাবে নিল তা আমার কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
সূর্যকুমার কেন নিশানায়? পাকিস্তানকে হারানোর পর তিনি বলেছেন, “পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। এই জয় আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে উৎসর্গ করছি, যাদের সাহস সত্যিই অসাধারণ। আশা করি ভবিষ্যতেও তারা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।” সূর্যের মন্তব্যে রাজনৈতিক রঙ থাকার অভিযোগ পাকিস্তান পক্ষ থেকে আনা হয়েছে।
মাঠের উত্তেজনার পাশাপাশি এই নালিশ-বদল ভারতের ও পাকিস্তানের সম্পর্ককে ক্রিকেটের আঙিনাতেও তীব্র করে তুলেছে। আইসিসি-র রেফারি রিচার্ডসনই শেষ সিদ্ধান্ত দেবেন কার মন্তব্য শাস্তিযোগ্য এবং কার নয়। মাঠের উল্লাস এখন কোর্টের মতো আইনি নজরে আসতে বসেছে।
ব্যালকনির উপর উড়ালপুল! নাগপুরের সেতু স্মরণ করাচ্ছে ভোপালের ৯০ ডিগ্রি রেলসেতুর ঘটনার কথা

