কান্নায় ভেঙে পড়লেন গরিমা
সিঙ্গাপুরে গিয়ে জলজ্যান্ত মানুষ হয়ে ফিরেছিলেন জ়ুবিন গার্গ। কিন্তু এখন তাঁর দেহ কফিনবন্দি হয়ে এসেছে। রবিবার সকালেই গুয়াহাটী বিমানবন্দরে পৌঁছায় প্রয়াত গায়কের দেহ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী গরিমা শইকীয়া গার্গ। স্বামীর কফিনবন্দি দেহ দেখে তিনি নিজেকে সামলাতে পারলেন না। বুকের উপরে ‘গামোছা’ রেখে অঝোরে কাঁদতে থাকলেন, আর উপস্থিত সবাইকে আবেগের ছোঁয়া লাগিয়ে দিলেন।
জ়ুবিন যখন সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন, তখন তাঁর শরীরে কোনও সমস্যা ছিল না। সুস্থ ছিলেন, সক্রিয় ছিলেন, এবং তিনি স্কুবা ডাইভিং-এর মতো কার্যক্রমে মেতে উঠেছিলেন। কেউ ভাবতেই পারেননি, সেই প্রাণবন্ত শিল্পী এত শীঘ্রই আমাদের মাঝে থাকবেন না। বিমানবন্দরে এসে কফিনবন্দি স্বামীকে দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি গরিমা। তাঁর চোখ, কান্নার ঢেউ, এবং বুকের ওপর রাখা গামোছা—সবই উপস্থিত জনতার হৃদয়ে অদ্ভুত এক বেদনার ছাপ রেখে যায়।
বিমানবন্দরে স্বাগত ও শেষকৃত্যের প্রস্তুতি চলাকালীন রাজ্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গরিমা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, কিন্তু নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না। কফিনটি ফুলে সজ্জিত অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থানান্তর করা হয়। এর পর শুরু হয় তাঁর পরিবারের সঙ্গে শেষ যাত্রা।
প্রথমে গায়কের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কাহিলিপারার বাসভবনে। সেখানে ছিলেন সদ্যপ্রয়াত শিল্পীর ৮৫ বছরের বাবা এবং ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যরা। বাবা-বাবু, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়স্বজন—সবাই চোখে অশ্রু নিয়ে বসেছিলেন। এরপর দেহটি নেওয়া হয় অর্জুন ভোগেশ্বর বরুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। শনিবার রাত থেকে হাজার হাজার অনুরাগী সেখানে হাজির ছিলেন, তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এক্স-হ্যান্ডলে জানিয়েছিলেন, রবিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অনুরাগীরা শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। বার্তায় লেখা ছিল, “গভীর দুঃখের সঙ্গে অসম সরকার জানাচ্ছে, সকলের প্রিয় শিল্পী জ়ুবিন গার্গের দেহ রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অর্জুন ভোগেশ্বর বরুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্সে রাখা থাকবে।”
গরিমার চোখে অশ্রু, বাবার হাউহাউ কান্না, অনুরাগীদের দমবন্ধ করা নীরবতা—সব মিলিয়ে তৈরি হল এক অবিস্মরণীয় চিত্র। যেখানে পুরো অসম, পুরো গানের প্রেমিক মহল এক হয়ে শেষবারের জন্য তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাল। জলজ্যান্ত মানুষ থেকে কফিনবন্দি হয়ে যাওয়া জ়ুবিনের এই শেষ যাত্রা শুধুই পরিবারের নয়, পুরো দেশের শ্রোতাদের এক গভীর অনুভূতির সাক্ষী হয়ে রইল।
ব্যালকনির উপর উড়ালপুল! নাগপুরের সেতু স্মরণ করাচ্ছে ভোপালের ৯০ ডিগ্রি রেলসেতুর ঘটনার কথা

