শ্রীলঙ্কার জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশ
এক ম্যাচেই তিন দলের ভাগ্য নির্ধারণ! আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে ছিল কেবলমাত্র এক খেলার সঙ্গে। মঙ্গলবার সেই ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে জায়গা নিশ্চিত করল শ্রীলঙ্কা। তাদের সঙ্গে হাসি ফুটল বাংলাদেশের মুখেও, বিদায় নিল আফগানিস্তান।
আফগান অধিনায়ক রশিদ খান টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। আগের ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকে এবার ভেবেছিলেন রান তাড়া না করে নিরাপদ পথেই হাঁটবেন। কিন্তু পিচ বোঝার ভুলেই চাপে পড়ে গেল তাঁর দল। ম্যাচের প্রথম দিকে উইকেট ব্যাটারদের পক্ষে ছিল না। বল আসছিল ধীর গতিতে। এর মধ্যেই নুয়ান তুষারার আগুনঝরা স্পেল আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে প্রায় ভেঙে দিল। মাত্র ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে তুলে নিলেন ৪ উইকেট। তাঁর সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না আফগান ব্যাটাররা। স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ৭৯ রানে ৬ উইকেট।
তবে খেলার রঙ বদলান ৪০ বছর বয়সি অভিজ্ঞ মহম্মদ নবি। এক হাতে দলকে টেনে তোলেন তিনি। শেষ দুই ওভারে তাঁর ব্যাট থেকে ঝড়ের মতো ছক্কার বৃষ্টি। বিশেষ করে দুনিথ ওয়েল্লালাগের করা শেষ ওভারে প্রথম পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করলেন নবি। শেষ বলটিও যদি ছক্কায় পরিণত হতো, ইতিহাস গড়তে পারতেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২২ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলে দলকে ভরসা দিলেন। রশিদ খানও কিছুটা সঙ্গ দিলেন। সব মিলিয়ে ২০ ওভারে আফগানিস্তান তুলল ১৬৯ রান।
১৬৯ তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার শুরুটা ছিল কিছুটা অনিশ্চিত। ফর্মে থাকা পাথুম নিসঙ্কা দ্রুত আউট হয়ে গেলে চাপ বাড়ে। আফগানিস্তানের স্পিন ত্রয়ী—রশিদ, নবি ও নুর আহমেদ—তেমন কার্যকরী হতে পারলেন না। গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা সহজেই রান তুলতে থাকেন। মুজিব উর রহমান এক উইকেট পেলেও ৩.৪ ওভারে দিয়ে ফেললেন ৪২ রান।
এবার দলের দায়িত্ব কাঁধে নিলেন কুশল মেন্ডিস। তাঁর ধৈর্যশীল অথচ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং আফগানিস্তানের জয়ের আশা নিভিয়ে দিল। কুশল পেরেরা, চারিথ আসালঙ্কা ও কামিন্দু মেন্ডিস সামান্য অবদান রাখলেও আসল কাজ করলেন কুশল মেন্ডিস। শেষ পর্যন্ত ৫২ বলে ৭৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জেতালেন তিনি। শ্রীলঙ্কা জিতল ৮ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে।
অন্যদিকে, ফিল্ডিংয়েও আফগানিস্তান ব্যর্থ হল। একাধিক সহজ ক্যাচ ফসকায়, রান আউটের সুযোগ নষ্ট করে তারা। ফলে নবির ঝড়ো ইনিংসও বৃথা গেল।
এই জয় শুধু শ্রীলঙ্কাকেই নয়, বাংলাদেশকেও পৌঁছে দিল সুপার ফোরে। গ্যালারিতে বসা অসংখ্য বাংলাদেশি সমর্থক একসময়ে নবির ছক্কার বৃষ্টি দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মেন্ডিসের ব্যাটে ম্যাচ ঘুরে যেতেই শুরু হয় উল্লাস। মাঠে না নেমেই বাংলাদেশ পেল শেষ চারে ওঠার টিকিট।
সব মিলিয়ে, আফগানিস্তানের স্বপ্নভঙ্গ হলেও এই ম্যাচ প্রমাণ করে দিল—ক্রিকেটে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কিছুই বলা যায় না। নবির ছক্কার ঝড় যতই দর্শকদের উত্তেজিত করুক, শেষ হাসি হাসল শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ।
ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

