Monday, December 1, 2025

আমেরিকায় প্রকাশ্যে খুন ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ নেতা! চার্লির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ প্রেসিডেন্ট, দায়ী করলেন বামপন্থীদের

Share

চার্লির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ প্রেসিডেন্ট, দায়ী করলেন বামপন্থীদের

আমেরিকায় প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হল ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও তরুণ রক্ষণশীল নেতা চার্লি কির্ককে। বয়স মাত্র একত্রিশ। বুধবার ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটির এক খোলা আলোচনায় অংশ নিতে গিয়ে ঘটে গেল এই মর্মান্তিক ঘটনা। ছাত্র-যুবদের সঙ্গে কথোপকথনের মাঝেই হঠাৎ ভিড়ের মধ্য থেকে এক আততায়ীর গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চার্লি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ এখনও হামলাকারীর খোঁজে। প্রাথমিকভাবে এক জনকে আটক করা হলেও পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আতঙ্ক কাটেনি। কে বা কারা এর পিছনে, তা স্পষ্ট নয়। তবে রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

চার্লির মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকবার্তায় ভেসে গিয়েছে সমাজমাধ্যম। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে লিখেছেন, “আমেরিকার যুবসমাজের মন চার্লির মতো কেউ বুঝতে পারেনি। ওঁকে সবাই ভালবাসত, শ্রদ্ধা করত। তিনি ছিলেন মহান দেশপ্রেমিক ও শহিদ।” শোক প্রকাশের পাশাপাশি চার্লির প্রতি সম্মান জানাতে জাতীয় পতাকা রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

শুধু শোক নয়, ট্রাম্প দায়ও চাপিয়েছেন সরাসরি মার্কিন বামপন্থীদের উপর। তাঁর অভিযোগ, বিপ্লবী বামপন্থীরা বহু দিন ধরেই চার্লির মতো দেশপ্রেমিকদের নাৎসি বা অপরাধীর সঙ্গে তুলনা করে চলেছে। এই প্রচারের ফলেই আমেরিকায় সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “যাঁরা দেশে সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, তাঁদের একে একে খুঁজে বার করা হবে।”

চার্লি কির্ক আমেরিকার রাজনীতিতে এক বিতর্কিত কিন্তু প্রভাবশালী নাম। অতি রক্ষণশীল মনোভাবের জন্য যেমন অনেকের সমালোচনার শিকার হয়েছেন, তেমনই ট্রাম্প-সমর্থকদের মধ্যে ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। শেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ছাত্র-যুবকদের রিপাবলিকানদের দিকে টেনে আনার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকাই ছিল মুখ্য—এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি তিনি শুরু করেছিলেন ‘দ্য আমেরিকান কামব্যাক ট্যুর’, যার উদ্দেশ্য ছিল দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে নিজের রাজনৈতিক বার্তা ছড়ানো। ইউটার বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সেই সফরেরই অংশ হিসেবে গিয়েছিলেন।

এই ঘটনার আগের মুহূর্তের একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, চার্লি মঞ্চে বসে ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। তাঁর গায়ে সাদা টি-শার্ট। হঠাৎই এক গুলি এসে লাগে তাঁর বুকে, আর সঙ্গে সঙ্গেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। আতঙ্কে চিৎকার করতে করতে দৌড়ে পালান উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা। ভিডিওটি ঘিরে তীব্র আলোড়ন তৈরি হলেও এর সত্যতা এখনও সরকারি ভাবে নিশ্চিত হয়নি।

চার্লির মৃত্যু আমেরিকার রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল বলেই মনে করছেন অনেকেই। কারণ, এক দিকে রিপাবলিকান শিবির শোকাহত ও ক্ষুব্ধ, অন্য দিকে ডেমোক্র্যাট ও বামপন্থীদের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা হচ্ছে সরাসরি। আগামী দিনে এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক সংঘাত আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

মাত্র একত্রিশ বছরে এমন এক তরুণ নেতার মৃত্যু শুধু রক্ষণশীল শিবির নয়, গোটা আমেরিকার রাজনীতিতেই শূন্যতা তৈরি করল। এখন প্রশ্ন, কে বা কারা এই হামলার নেপথ্যে এবং কীভাবে এর পরিণতি সামাল দেবে আমেরিকা?

ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

Read more

Local News