বিস্ফোরক-সহ পাঁচ সন্দেহভাজন গ্রেফতার
দেশের রাজধানী দিল্লি এবং আশেপাশের এলাকায় ভয়াবহ নাশকতার পরিকল্পনা বানচাল করল পুলিশ। গত কয়েক দিনে ধারাবাহিক অভিযানে মোট পাঁচ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে আইইডি, বিস্ফোরক এবং অস্ত্র। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে কয়েক জন পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছিলেন।
বুধবার দিল্লি এবং ঝাড়খণ্ড থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের নাম অফতাব এবং আশরফ দানিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আশরফ দানিশ গোটা চক্রের মূল চালক। তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেফতার হওয়া দু’জনকে জেরা করেই পুলিশ আরও তিন জনের খোঁজ পায়।
এর পর দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল দ্রুত মধ্যপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার পুলিশকে খবর দেয়। যৌথ অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানা থেকে আরও তিন জনকে আটক করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এবং বিভিন্ন অস্ত্র।
তদন্তে উঠে এসেছে, এই পাঁচ জন একে অপরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। বিভিন্ন সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তাঁরা পরিকল্পনা চালাতেন এবং নির্দেশ নিতেন। শুধু তাই নয়, ধৃতদের দায়িত্ব ছিল তরুণ প্রজন্মকে প্রলোভন দেখিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো। পুলিশের ধারণা, এঁরা সবাই আল-কায়দার ভারতীয় শাখা, অর্থাৎ একিউআইএস-এর একটি সক্রিয় মডিউলের সঙ্গে যুক্ত।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, ধৃতরা শুধু দিল্লি নয়, এনসিআর এবং দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে নাশকতার ছক কষছিল। জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য অর্থ এবং সরঞ্জামের যোগান আসছিল সীমান্তের ওপার থেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে ভারতের যুবসমাজকে লক্ষ্য করে মগজধোলাই চালানো হচ্ছিল।
এই ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও সতর্ক হয়ে উঠেছে। কারণ, একাধিক রাজ্যে সমন্বিতভাবে নাশকতার পরিকল্পনা করার চেষ্টা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ঘটনার পেছনে বড়সড় নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে, যা শুধু পুলিশি অভিযান দিয়ে রুখে দেওয়া সম্ভব নয়; প্রয়োজন আরও সুসংগঠিত গোয়েন্দা নজরদারি।
ধৃতদের জেরা করে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি করছে পুলিশ। কোন কোন জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল, কারা তাদের আশ্রয় দিচ্ছিলেন এবং সংগঠনের পেছনে কারা অর্থ যোগাচ্ছিলেন—এসব বিষয়েও খোঁজ চলছে।
এই ঘটনায় একদিকে যেমন রাজধানী এবং তার আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, অন্যদিকে গোটা দেশেই নতুন করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন চেষ্টা করছে গোটা নেটওয়ার্ককে একেবারে ভেঙে ফেলতে।
সব মিলিয়ে, রাজধানীর অদূরে নাশকতার এই ছক সফল হলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সময়মতো পুলিশি পদক্ষেপে অন্তত আপাতত একটি বড় বিপদ এড়ানো গেল।
ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

