সাংবাদিককে পালটা হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ক্ষোভ উগরে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি এক সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাজ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেও কেন আমেরিকা তাঁর বিরুদ্ধে বড়সড় পদক্ষেপ করছে না? প্রশ্ন শুনেই চটে যান ট্রাম্প। সরাসরি পালটা জবাব দেন, “আপনি কী করে জানলেন যে, কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি?” এরপরেই ভারত প্রসঙ্গ টেনে এনে ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাপে রাখতে ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্কই প্রমাণ করছে তাঁর সরকারের অবস্থান।
শুল্কনীতিতে রাশিয়ার ক্ষতি
ট্রাম্প বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন, ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্যই। তাঁর দাবি, “এটার জন্য বহু কোটি ডলার লোকসান হয়েছে রাশিয়ার।” ট্রাম্পের কথায় স্পষ্ট, রাশিয়ার তেলের অন্যতম বড় আমদানিকারক দেশ ভারতকেই নিশানা করে মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার অর্থনীতিকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, “চিনের পর ভারতই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রেতা। আর আপনারা বলছেন পদক্ষেপ হয়নি? এটা স্পষ্টতই একটা পদক্ষেপ।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রশাসনের কৌশলই এখন মূল আলোচ্য। বাইডেনের আমলেই রাশিয়ার তেল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে সেই নীতি বহাল রেখেছেন। শুধু তাই নয়, ভারতের পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। তবু যুদ্ধ থামেনি। এমনকি, পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরিকল্পনাও কার্যত ভেস্তে গিয়েছে।
ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি এখনও দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্যায়ের পদক্ষেপ করিনি।” তাঁর কথায়, ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। যদিও তিনি স্পষ্ট করে জানাননি, সেই পদক্ষেপ কী ধরনের হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার এই অবস্থান রাশিয়ার অর্থনীতিতে আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভারসাম্যে নতুন সমীকরণ আনবে।
সাংবাদিককে তিরস্কার
প্রশ্নোত্তর পর্বে ট্রাম্প সরাসরি সাংবাদিককে আক্রমণ করে বলেন, “আপনি যদি বলেন কোনও পদক্ষেপ হয়নি, তা হলে আমার মনে হয়, আপনার অন্য চাকরি খোঁজা উচিত।” তাঁর এই মন্তব্য নতুন বিতর্কও তৈরি করেছে। তবে ট্রাম্পের বক্তব্যে স্পষ্ট, মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক লড়াইয়ে কোনও ছাড় দেবে না।
ভারতকে কেন্দ্র করে মার্কিন নীতি
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্কই ট্রাম্প প্রশাসনের নজরে। ভারত বরাবরই জানিয়েছে, তেলের দাম ও জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতেই নীতি স্থির হয়। কিন্তু আমেরিকা এবার সরাসরি ভারতের উপর অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে রাশিয়াকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে। ফলে বিশ্ববাজারে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা
ট্রাম্পের মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহল এখন ভাবছে, দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্যায়ের ‘পদক্ষেপ’ বলতে তিনি ঠিক কী বোঝাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হয়তো রাশিয়ার তেলের রফতানির উপর আরও নিষেধাজ্ঞা বা মিত্র দেশগুলিকে চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে। তবে স্পষ্ট যে, রাশিয়াকে চাপে রাখতে ভারতকে ব্যবহার করতেই চাইছে আমেরিকা, যা ভবিষ্যতে বিশ্ব কূটনীতিতে নতুন জটিলতা তৈরি করবে।
ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

