Monday, December 1, 2025

“গরু পবিত্র, গোমাংস নিষিদ্ধ”— সেলিম খানের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবনা ও পারিবারিক সংস্কার

Share

সেলিম খানের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবনা ও পারিবারিক সংস্কার!

বলিউডের কিংবদন্তি চিত্রনাট্যকার এবং অভিনেতা সলমন খানের বাবা সেলিম খান শুধু তাঁর লেখনীর জন্যই নয়, ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির জন্যও বারবার শিরোনামে উঠে আসেন। প্রতি বছর গণেশচতুর্থীতে খান পরিবারের ঘরে থাকে উৎসবের আমেজ। সলমন নিজেও গণপতির আরাধনায় যোগ দেন। এই দৃশ্য অনুরাগীদের কাছে প্রশংসনীয় হলেও, মাঝে মধ্যেই কিছু মানুষের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় পরিবারটিকে— “ভিন্‌ধর্মের মানুষ হয়েও কেন গণেশপুজো?”

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেলিম খান খোলাখুলি উত্তর দিয়েছেন এসব প্রশ্নের। জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারে ছোটবেলা থেকেই ধর্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সহনশীলতার শিক্ষা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “আমাদের ঘরে সবাই নিজের মতো করে প্রার্থনা করে। আমার স্ত্রী পুজো করেন, আমি নামাজ পড়ি। আমার সন্তানদেরও এই মূল্যবোধেই বড় করেছি। প্রত্যেক ধর্মের ভালো দিকগুলোকে আমরা সাদরে গ্রহণ করেছি।”

এই সাক্ষাৎকারে সেলিম খান তাঁর গোমাংস না খাওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। ইন্দোরে বেড়ে ওঠা সেলিম বলেন, “ইন্দোর থেকে আজ পর্যন্ত আমরা কেউ গোমাংস খাইনি। অনেকেই খান, কারণ এটা সস্তা মাংস। কেউ কেউ আবার কুকুরকে খাওয়ানোর জন্যও কেনেন।” তাঁর মতে, ধর্মীয় বিশ্বাসে গরু অত্যন্ত পবিত্র। গরুর দুধকে মাতৃদুগ্ধের পরিপূরক মনে করা হয়, তাই গরু হত্যা বা গোমাংস খাওয়াকে তিনি সমর্থন করেন না।

সেলিম খান আরও বলেন, “আমাদের ধর্মে গোমাংস নিষিদ্ধ। গরুর প্রতি শ্রদ্ধা শুধু আমাদের ধর্মে নয়, অন্যান্য ধর্মেও দেখা যায়। আমরা সব ধর্মের ভালো দিক নিজেদের জীবনে আনার চেষ্টা করি।” তাঁর এই মনোভাব খান পরিবারের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার এক আলাদা উদাহরণ তৈরি করেছে।

খান পরিবারের এই উদার দৃষ্টিভঙ্গি বলিউডে বিরল নয়, তবে সেলিম খান এই মূল্যবোধকে ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মেনে চলেন। মুম্বইয়ের ব্যস্ত জীবনের মাঝেও তিনি এখনও সেই ইন্দোরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কারের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন। গণেশপুজো হোক বা ঈদের নামাজ, তাঁদের পরিবারে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবই সমান গুরুত্ব পায়।

এই সাক্ষাৎকারে সেলিম খান আরও একবার প্রমাণ করলেন, ধর্মের সীমারেখা মেনে চলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহাবস্থান সম্ভব। গোমাংস না খাওয়ার মতো সিদ্ধান্ত কেবল ধর্মীয় বিশ্বাস থেকেই নয়, বরং গরুর প্রতি সম্মান এবং মানবিকতার বার্তাও দেয়। তাঁর কথায়, “ধর্ম আসলে মানুষকে কাছাকাছি আনে, আলাদা করে না। আমরা সেই ভাবনাতেই বাঁচতে চাই।”

খান পরিবারের এই মূল্যবোধ নিঃসন্দেহে নতুন প্রজন্মের কাছে এক অনুপ্রেরণার বার্তা।

ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

Read more

Local News