Tuesday, December 2, 2025

মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে বিপর্যস্ত হিমাচল: শিমলা-কুলুতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বন্ধ ৮৪২টি রাস্তা

Share

শিমলা-কুলুতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বন্ধ ৮৪২টি রাস্তা

প্রকৃতির রোষে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ। টানা বৃষ্টি, মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষত শিমলার রামপুর বুশহর এবং কুলু জেলায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, শনিবার সকালে রামপুর বুশহরের বাশাল এলাকায় প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। তার জেরে বধাল ও সারাহন পঞ্চায়েত এলাকাগুলি ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি ও চাষের জমি।

মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং পরবর্তী হড়পা বানের জেরে হিমাচলের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাটও বিপর্যস্ত। নাথপার কাছে ৫ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় ১৯০ মিটার অংশ ভেঙে গিয়েছে, আর নিগুলসরীর কাছে আরও ৮০ মিটার রাস্তায় ধস নেমেছে। এর ফলে শিমলা থেকে রামপুর বুশহরের সরাসরি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, ধসের কারণে তিনটি জাতীয় সড়ক-সহ রাজ্যের মোট ৮৪২টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই ভেঙে পড়া পরিস্থিতি স্থানীয়দের দৈনন্দিন জীবনকে প্রায় অচল করে দিয়েছে।

কুলু জেলার হিড়বেও একই চিত্র। প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টির পর হড়পা বানের জেরে গ্রামগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, একাধিক বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর খবর মেলেনি। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব পেতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের মধ্যে হিমাচল প্রদেশে আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। তাদের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কিছু এলাকায় এই বিপজ্জনক আবহাওয়া ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। রবিবার উনা, চম্বা, কাঁড়া, কুলু ও মণ্ডি জেলায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই উদ্ধার ও ত্রাণকাজে নেমেছে রাজ্য প্রশাসন। সেনা ও দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

হিমাচলের পাহাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যতটা মুগ্ধ করে, তার অস্থির ভৌগোলিক অবস্থান ততটাই বিপদের কারণ। লাগাতার বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি আলগা হয়ে ধস নামছে এবং পাহাড়ি নদীগুলি প্লাবিত হয়ে গ্রামাঞ্চলে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তাঁরা অনেক বছরেও দেখেননি।

রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, পাশাপাশি রাস্তা পরিষ্কার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উদ্ধারকাজে বেশ কিছুটা বাধা তৈরি হচ্ছে।

প্রকৃতির এই তাণ্ডবের মধ্যে সাধারণ মানুষ এক অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, আগামী কয়েক দিন পাহাড়ি এলাকায় অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে হবে। হিমাচলবাসী এখন কেবল অপেক্ষা করছেন আকাশের রুদ্রমূর্তি শান্ত হওয়ার জন্য।

চিনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নে দৃঢ় সংকল্প ভারত, এসসিও শীর্ষবৈঠকে নতুন কূটনৈতিক দিশা খুঁজছেন মোদী

Read more

Local News