জরিমানা-সহ ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর!
ভারতের উপর আমেরিকার শুল্ক-চাপ আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হতে চলেছে বুধবার সকাল থেকেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ঘোষণা করেছে, ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ নিয়মিত শুল্ক এবং বাকি ২৫ শতাংশ জরিমানার অঙ্ক। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে আর্থিকভাবে শক্তি জোগাচ্ছে।
মঙ্গলবার মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আমেরিকার ইস্টার্ন জোনের সময় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, যা ভারতের সময় অনুযায়ী বুধবার সকাল ৯টা ৩১ মিনিট। এরপর থেকে মার্কিন বাজারে প্রবেশ করা প্রতিটি ভারতীয় পণ্যের ওপর এই শুল্ক বসবে। এই ঘোষণা ভারতের অর্থনীতি এবং বাণিজ্যে বড় ধাক্কা আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার দিল্লিতে অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী এবং শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাজারে ভারতের অবস্থান ধরে রাখা এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির বিকল্প পথ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারি সূত্রের দাবি, দেশীয় বাজারকে আরও শক্তিশালী করা, বিদেশি বিনিয়োগ টানা এবং শিল্পখাতের প্রসার ঘটানো হবে প্রধান লক্ষ্য।
একই দিনে প্রকাশিত জার্মান সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্প সম্প্রতি মোদীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন অন্তত চারবার, কিন্তু নয়াদিল্লি সাড়া দেয়নি। সোমবার আহমেদাবাদের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘যত চাপই আসুক, ভারত তার মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আত্মনির্ভর ভারতের পথে আমরা অনেকটাই এগিয়ে গেছি।’’
তবে ভারতকে দোষারোপ করলেও আমেরিকা এবং ইউরোপ নিজেরাই রাশিয়ার সঙ্গে ব্যাপক বাণিজ্যে যুক্ত। ২০২৪ সালে ইউরোপ-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৭,৫০০ কোটি ইউরো। ইউরোপ শুধু তেল নয়, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার, খনিজ ও ইস্পাতও রাশিয়া থেকে আমদানি করছে। আমেরিকাও রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরেনিয়াম, প্যালাডিয়ামসহ নানা কাঁচামাল কিনছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্কের ফলে ভারতীয় রফতানিতে প্রায় ৪০০০ কোটি ডলার ক্ষতি হতে পারে। তবে দেশীয় বাজার সম্প্রসারণ এবং নতুন বিনিয়োগ টানার মাধ্যমে এই চাপ মোকাবিলা করা সম্ভব। বৈঠকে মোদী কৃষক, ক্ষুদ্র শিল্প এবং গবাদি পশুপালকদের স্বার্থে কোনও আপস না করার বার্তা দিয়েছেন।
ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের এই অস্থির সময়ে দিল্লির কূটনৈতিক কৌশল এবং অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কতটা কার্যকর হয়, তা এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজরে।
দক্ষিণী স্বাদের অনন্য ভর্তা: এল্লু থুভৈয়াল, গরম ভাতে ঘি মেখে খেতে একেবারে স্বর্গীয়

