Monday, December 1, 2025

দিল্লির পথকুকুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়: বন্ধ্যাত্বকরণে জোর, থাকছে কিছু ব্যতিক্রম

Share

দিল্লির পথকুকুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়!

রাজধানী দিল্লির পথকুকুরদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। আগের দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ স্থগিত করে এবার নতুন বেঞ্চ জানিয়েছে, কুকুরদের নির্বিচারে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার বদলে তাদের বন্ধ্যাত্বকরণ ও টিকাকরণে জোর দিতে হবে। আদালতের মতে, এই প্রক্রিয়াই দীর্ঘমেয়াদে সমস্যার সমাধান আনতে পারে।

শুক্রবার বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এনবি অঞ্জারিয়ার বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন— দিল্লির রাস্তায় থাকা পথকুকুরদের প্রশাসন তুলে নিয়ে নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাবে। সেখানে তাদের সঠিকভাবে বন্ধ্যাত্বকরণ এবং প্রতিষেধক দেওয়া হবে। পরে আবার তাদের একই জায়গায় ফিরিয়ে দিয়ে যেতে হবে। তবে, যেসব কুকুর র‌্যাবিস আক্রান্ত বা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের, তাদের আশ্রয়কেন্দ্রেই রাখতে হবে, রাস্তায় ফেরানো যাবে না।

এই রায়ে আরও বলা হয়েছে, দিল্লির রাস্তায় আর প্রকাশ্যে কুকুরদের খাবার দেওয়া যাবে না। বরং প্রশাসনকে নির্দিষ্ট খাওয়ানোর জায়গা চিহ্নিত করতে হবে। যদি কেউ প্রকাশ্যে নিয়ম ভেঙে খাবার দেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হতে পারে। এমনকি অভিযোগ জানানোর জন্য বিশেষ হেল্পলাইন চালুর নির্দেশও দিয়েছে আদালত। তবে, কোনও পশুপ্রেমী চাইলে রাস্তার কুকুরকে পোষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারবেন— সেই সুযোগও রাখা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন কেমনভাবে হবে, কারা কুকুর ধরবেন, পর্যাপ্ত কর্মী আছে কি না— এ সব বিষয়ে দিল্লি পুরসভাকে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে অন্তত পাঁচ হাজার পথকুকুরের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। শুধু দিল্লিই নয়, এই রায়কে দেশব্যাপী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন হাই কোর্টে পথকুকুর সংক্রান্ত যে সব মামলা বিচারাধীন রয়েছে, সেগুলি একত্রিত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হবে।

এত দিন আগের নির্দেশে বলা হয়েছিল, রাস্তা থেকে সব কুকুরকে সরিয়ে আশ্রয়ে রাখতে হবে। সেই রায় নিয়ে পশুপ্রেমী এবং বিভিন্ন এনজিও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তাঁদের দাবি ছিল, সব পথকুকুরকে ‘আগ্রাসী’ বলে দেগে দেওয়া অন্যায়। এবার নতুন রায়ে সেই উদ্বেগ কিছুটা হলেও দূর হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে দিল্লির বহু পশুপ্রেমী। তাঁদের মতে, এই রায়ে ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে। একদিকে যেমন মানুষের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনা করা হয়েছে, তেমনই পশুদের মৌলিক অধিকারও অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে। আদালতের এই সিদ্ধান্তে ভবিষ্যতে পথকুকুর সমস্যা মোকাবিলায় আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

আট সপ্তাহ পরে আবার এই মামলার শুনানি হবে। তত দিনে দিল্লি পুরসভা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন কতটা এগিয়েছে, তার রিপোর্ট দিতে হবে। পশুপ্রেমীদের আশা— এই রায় দেশের অন্য শহরগুলিতেও পথকুকুর সমস্যার ক্ষেত্রে দিশা দেখাবে।

জমি কেনার নামে শত কোটির সম্পত্তি দখলের চেষ্টা? বাঁকে বিহারী মন্দিরকে ঘিরে উত্তাপ

Read more

Local News