Monday, December 1, 2025

ডুরান্ড ফাইনালে ইতিহাস গড়ল ডায়মন্ড হারবার, ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে উচ্ছ্বাস যুবভারতীতে

Share

ডুরান্ড ফাইনালে ইতিহাস গড়ল ডায়মন্ড হারবার!

কলকাতার ময়দানে নতুন এক শক্তির নাম এখন ডায়মন্ড হারবার এফসি। সদ্য মোহনবাগানের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও, ডার্বিজয়ী ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নিল কিবু ভিকুনার ছেলেরা। ২-১ গোলে লাল-হলুদ ব্রিগেডকে হারিয়ে প্রথমবার ডুরান্ড কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ক্লাব। শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে নামবে তারা, আর সেই ম্যাচই হতে পারে তাদের প্রথম বড় ট্রফি জয়ের সাক্ষী।

শুরুতেই উত্তেজনা, ইস্টবেঙ্গলের ভুলে সুযোগ

যুবভারতীর গ্যালারিতে সেদিন যেন টানটান উত্তেজনা। খেলার শুরুতেই গোলের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার। ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের শিশুসুলভ ভুলে ম্যাচের প্রথম ২৫ সেকেন্ডেই এগিয়ে যেতে পারত নতুন শক্তি। ২৪ মিনিটে স্যামুয়েলের শট যদি পোস্টে লেগে না ফিরত, তবে আরও আগেই লিড পেত ভিকুনার দল। শুরু থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল, ম্যাচটা সহজ হবে না ইস্টবেঙ্গলের জন্য।

প্রথমার্ধে দাপট ইস্টবেঙ্গলের

তবে প্রথমার্ধে ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণ করছিল অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা। মাঝমাঠে দাপট, একের পর এক আক্রমণ – দিয়ামানতাকোস, মিগুয়েলরা বারবার চাপ তৈরি করেছিলেন ডায়মন্ড হারবার রক্ষণে। দূর থেকে শট নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন আনোয়ার আলি ও সিবল। কিন্তু আক্রমণের ঝড় সামলেও বারবার পাল্টা আক্রমণে ওঠে ডায়মন্ড হারবার। এই পাল্টা আক্রমণেই আসল ভয় তৈরি হয় ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সে।

মিরশাদের প্রাচীর, হতাশ লাল-হলুদ

দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ আরও তীব্র হয়। দিয়ামানতাকোস ও বিপিন সিংহ একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। গোলের সামনে একা হয়েও তারা ডায়মন্ড হারবারের গোলরক্ষক মিরশাদকে পরাস্ত করতে পারেননি। নিজের প্রাক্তন ক্লাবের বিপক্ষে মিরশাদ যেন অটল প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর একের পর এক সেভ হতাশ করেছে ১৬ বার ডুরান্ড জয়ী ইস্টবেঙ্গলকে।

গোলের পর গোল, নাটকীয় মুহূর্ত

৬৬ মিনিটে ম্যাচে আসে নাটকীয় মোড়। ফ্রিকিক থেকে পাওয়া বল বক্সের মধ্যে ধরে চমৎকার ব্যাক ভলিতে গোল করেন মিকেল কোর্তাজ়ার। এগিয়ে যায় ডায়মন্ড হারবার। তবে আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মাত্র এক মিনিট পরেই আনোয়ার আলির অসাধারণ দূরপাল্লার শটে সমতায় ফেরে ইস্টবেঙ্গল। সেই গোল মুহূর্তেই মনে গেঁথে যায় দর্শকদের মনে।

কিন্তু ভাগ্য এ দিন ছিল ডায়মন্ড হারবারের পক্ষে। ইস্টবেঙ্গলের স্ট্রাইকারদের বারবার ব্যর্থতা আর মিরশাদের অটল দেয়াল ভেঙে আর গোল করতে পারেনি লাল-হলুদ ব্রিগেড। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় গোল এনে দিলেন জবি জাস্টিন, আর তাতেই জয় নিশ্চিত করে ফেলে নবীন শক্তি।

ইতিহাসের দোরগোড়ায় অভিষেকের দল

২-১ গোলে জয় এনে প্রথমবারের মতো ডুরান্ড কাপ ফাইনালে উঠল ডায়মন্ড হারবার এফসি। কলকাতার ফুটবল মানচিত্রে এই ক্লাবের উত্থান যেন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। একদিকে অভিজ্ঞ ও ঐতিহ্যশালী ইস্টবেঙ্গল হার মানল, অন্যদিকে ভিকুনার ছেলেরা প্রমাণ করল, জেদ আর লড়াই থাকলে অসম্ভব কিছু নেই।

এখন নজর শনিবারের ফাইনালে। নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে ডায়মন্ড হারবার। জয়ের ক্ষুধা আর প্রথম বড় ট্রফি জেতার স্বপ্নে বুক বাঁধা এই দল কি ইতিহাস লিখতে পারবে? তার উত্তর দেবে যুবভারতীর সবুজ গালিচা।

অস্ত্রোপচারের পর মঞ্চে শাহরুখ: ছেলেকে ভালবাসার আর্জি বাদশার

Read more

Local News