Monday, December 1, 2025

যুদ্ধক্লান্ত পুতিন, তবুও চুক্তি অনিশ্চিত! ট্রাম্পের নতুন দাবি ঘিরে বাড়ছে সংশয়

Share

যুদ্ধক্লান্ত পুতিন!

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ফের এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়ে ক্লান্ত হলেও এখনই কোনও শান্তিচুক্তিতে রাজি নন। তবে ট্রাম্প মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে পুতিন কোনও না কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ করবেন।

সম্প্রতি আলাস্কার ‘জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন’ সেনাঘাঁটিতে ট্রাম্প ও পুতিনের মুখোমুখি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে পুতিন নিজের শর্ত স্পষ্ট জানিয়ে মস্কোয় ফিরে যান। এর পরেই হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্প বৈঠক করেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে। শুধু জ়েলেনস্কিই নন, বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বের একাধিক প্রভাবশালী নেতা— ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার স্টাব, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ়, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন এবং নেটোর মহাসচিব মার্ক রুটে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই— যুদ্ধের অবসান ঘটানো। তবে সেই পথ কতটা মসৃণ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

ট্রাম্প নিজেও বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “পুতিন কী ভাবছেন, তা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বোঝা যাবে। হয়তো তিনি কোনও চুক্তি চান না। যদি তাই হয়, তবে তাঁকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।”

‘ফক্স নিউজ়’-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, “আমার মনে হয় যুদ্ধের ক্লান্তি এখন সকলের মধ্যেই আছে। পুতিনও ক্লান্ত। তবে আমি মনে করি না, এই যুদ্ধ শেষ করা অসম্ভব। বরং পুতিন ও জ়েলেনস্কির মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটলে সমাধান সহজ হতে পারে। দু’জনকেই আরও নমনীয় হতে হবে।”

জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর নিজের সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লেখেন, “আমি বৈঠকের পর পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। পাশাপাশি, জ়েলেনস্কি ও পুতিনের মধ্যে সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাবও দিয়েছি। ইতিমধ্যেই সেই বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এই বৈঠক হলে পরবর্তী সময়ে একটি ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় আমরা তিনজন একসঙ্গে বসব।”

তবে ইউক্রেন যুদ্ধ–পরবর্তী সময়ে মার্কিন সেনা পাঠানো নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান স্পষ্ট। তিনি বলেন, “ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন-সহ কয়েকটি দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে আগ্রহী। কিন্তু আমেরিকা সে পথে হাঁটবে না।”

এই প্রসঙ্গে ট্রাম্পের মন্তব্য আরও একবার আলোচনায় এসেছে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গির জন্য। নোবেল পুরস্কার জয়ের পর এবার তিনি বলেন, যদি তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সক্ষম হন, তবে “স্বর্গে যাওয়ার পথ” তাঁর জন্য খুলে যাবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের দাবি একদিকে যেমন আশার আলো দেখাচ্ছে, অন্যদিকে তেমনই সংশয়ও তৈরি করছে। যুদ্ধ ক্লান্ত হলেও পুতিন শান্তিচুক্তি করবেন কি না, তার উত্তর হয়তো লুকিয়ে রয়েছে আগামী কয়েক সপ্তাহেই।

পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি জ়েলেনস্কি, তবে আগাম শর্তে নয়

Read more

Local News