কিয়েভকে ৯০০০ কোটি ডলারের অস্ত্র দেবে আমেরিকা!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বৈঠক ঘিরে ফের সরগরম আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল। ফেব্রুয়ারিতে ওভাল অফিসে দু’জনের প্রকাশ্য বিতর্কের পর আবারও তাঁরা মুখোমুখি বসেন হোয়াইট হাউসে। তবে এ বার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েই আলোচনা হলেও এ দিন আর কোনও বিরোধ নয়, বরং গঠনমূলক কথোপকথন হয়েছে দুই নেতার মধ্যে।
প্রথমে জ়েলেনস্কির সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন ট্রাম্প। তার পর ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসেন তিনি। বৈঠকের মাঝেই ট্রাম্প সরাসরি ফোন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। দীর্ঘ আলোচনার পর আবার বৈঠকে ফিরে এসে জানান, পুতিন-জ়েলেনস্কির মুখোমুখি বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছেন তিনি। এমনকি ভবিষ্যতে আমেরিকা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেরও সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও তার তারিখ ও স্থান এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আলোচনায় উঠে আসে ইউক্রেনের নিরাপত্তা প্রসঙ্গ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, আমেরিকার দৃঢ় আশ্বাসই এ বৈঠকের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। অন্যদিকে জ়ার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ় দাবি করেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই জ়েলেনস্কি ও পুতিন সরাসরি আলোচনায় বসবেন। জ়েলেনস্কি নিজেও জানান, রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রাজি হয়েছে এবং এর পর ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও সমর্থন জানাচ্ছে মস্কো।
বৈঠক শেষে হোয়াইট হাউসের বাইরে জ়েলেনস্কি ঘোষণা করেন, ইউরোপীয় অর্থসাহায্যের মাধ্যমে আমেরিকা থেকে ৯০০০ কোটি ডলারের অস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেন। যদিও চুক্তিটি এখনও আনুষ্ঠানিক হয়নি, তবে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এটি কার্যকর হতে পারে। জ়েলেনস্কির মতে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরদার করাই এই বিশাল অঙ্কের অস্ত্র কেনার মূল লক্ষ্য।
ট্রাম্পও পরিস্কার জানিয়ে দেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রথম ঢাল হয়ে দাঁড়াবে ইউরোপীয় দেশগুলি। তবে যুক্তরাষ্ট্রও পিছিয়ে থাকবে না, প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে তারাও। এভাবে ইউক্রেনকে ঘিরে পশ্চিমা জোটের ঐক্য আরও দৃঢ় করার বার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, ফেব্রুয়ারির মতো এই বৈঠকে আর বড়সড় উত্তেজনা দেখা না গেলেও ইউক্রেনের মানচিত্র নিয়ে খানিক মতবিরোধ হয় ট্রাম্প ও জ়েলেনস্কির মধ্যে। রাশিয়া কতটা ভূখণ্ড দখল করেছে, তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিলেও তা বিতর্কের পর্যায়ে পৌঁছয়নি। পরে জ়েলেনস্কি নিজেই জানান, “আমি জানি আমাদের কতটা জমি দখল হয়ে রয়েছে।” নেটো প্রধান অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইউক্রেনের মানচিত্র নতুন করে আঁকার কোনও প্রশ্নই ওঠেনি আলোচনায়।
এই বৈঠকের সবচেয়ে বড় বার্তা হলো—দীর্ঘ যুদ্ধের মাঝেও শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে ধীরে হলেও অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। আমেরিকার বিশাল অস্ত্রচুক্তি, ইউরোপীয় দেশগুলির ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এবং ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে।
বাচ্চার পছন্দের বার্গার ও পিৎজ়া, তবে স্বাস্থ্যকর করে কেমন করে তুলবেন?

