Monday, December 1, 2025

দেড় বছর পর লাল-হলুদের ডার্বি জয়: দিয়ামানতাকোসের জোড়া গোলে ডুরান্ডের সেমিতে ইস্টবেঙ্গল

Share

দেড় বছর পর লাল-হলুদের ডার্বি জয়!

দীর্ঘ দেড় বছরের অপেক্ষার পর ডার্বিতে আবারও রং ছড়াল ইস্টবেঙ্গল। রবিবার জমজমাট লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে ২-১ গোলে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে উঠল লাল-হলুদ। এই জয়ের নায়ক দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস, যিনি জোড়া গোল করে দলের স্বপ্ন উজ্জ্বল করলেন।

ম্যাচের চিত্রনাট্য

শুরু থেকেই দেখা যাচ্ছিল ভিন্ন ছন্দে নেমেছে ইস্টবেঙ্গল। মাঝমাঠের দখল নেয় মহেশ নাওরেম, মিগুয়েল ফিগুয়েরা ও সাউল ক্রেসপোর মসৃণ পাসিং। অন্যদিকে মোহনবাগানের তারকা আপুইয়া, সাহাল, লিস্টনদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা চোখে পড়ছিল। প্রথম ২০ মিনিটে বাগানের গোলমুখে দু’বার বিপদ তৈরি হলেও গোল পায়নি ইস্টবেঙ্গল।

তবুও আক্রমণের ধার হারায়নি তারা। ম্যাচের ১৫ মিনিটের মাথায় চোটের কারণে নামতে হয় ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার হামিদ আহদাদকে। তার জায়গায় নামানো হয় দিয়ামানতাকোসকে। ভাগ্য যেন সেদিন লাল-হলুদের পক্ষেই ছিল। ৩৫ মিনিটে বিপিন সিংকে বক্সে ফাউল করেন আশিস রাই, পেনাল্টি থেকে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন দিয়ামানতাকোস। প্রথমার্ধের শেষদিকে আপুইয়ার দূরপাল্লার শট সামান্য বাইরে চলে যায়। সেটিই ছিল মোহনবাগানের একমাত্র উজ্জ্বল মুহূর্ত।

দ্বিতীয়ার্ধের রূপকথা

বিরতির পরই কোচ হোসে মোলিনা ভরসা রাখেন জেসন কামিংসের উপর। সুযোগও এসেছিল, কিন্তু সাহালের ভুল সিদ্ধান্তে গোল মিস করে বাগান। ঠিক তার কিছুক্ষণ পরেই, ৫২ মিনিটে আলবের্তো রদ্রিগেজ়ের পাস থেকে দুর্দান্ত গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ এগিয়ে দেন দিয়ামানতাকোস। তখন মনে হচ্ছিল, ম্যাচ একেবারেই হাতের মুঠোয় চলে এসেছে লাল-হলুদের।

তবে হার মানতে নারাজ মোহনবাগান। পেত্রাতোস, দীপক টাংরি নামানোর পর থেকেই তারা আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৬৮ মিনিটে অনিরুদ্ধ থাপার শট পোস্ট ঘেঁষে জালে জড়িয়ে যায়। ব্যবধান কমলেও লাল-হলুদের রক্ষণ, বিশেষ করে কেভিন সিবিলের গোললাইন সেভ, দলকে ভরসা জোগায়।

উত্তপ্ত শেষ মুহূর্ত

শেষ দশ মিনিটে খেলার তাপমাত্রা চড়ে ওঠে। একাধিক সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি আক্রমণে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। কিন্তু পরিকল্পিত ফুটবলে বাগানকে থামিয়ে দিয়ে শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে লাল-হলুদ শিবিরে শুরু হয় উল্লাস।

কোচ ব্রুজ়োর মাস্টারস্ট্রোক

ডার্বির আগে কোচ অস্কার ব্রুজ়ো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, গতবারের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দল নতুনভাবে নামবে। তাঁর সেই পরিকল্পনাই বদলে দিল খেলার চেহারা। বিপিন সিং, আনোয়ার আলি, কেভিন সিবিলের মতো খেলোয়াড়দের সঠিক ব্যবহার, বিদেশিদের জায়গামতো প্রয়োগ — সব মিলিয়ে মোহনবাগানের রক্ষণকে কার্যত অচল করে দেন ব্রুজ়ো।

সমর্থকদের উৎসব

বহু দিন পর ডার্বিতে এ রকম নির্ভেজাল আধিপত্য উপভোগ করল ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। জোড়া গোলের নায়ক দিয়ামানতাকোসকে ঘিরে চলল উচ্ছ্বাস। ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে এবার তাদের প্রতিপক্ষ বাংলারই আরেক দল ডায়মন্ড হারবার।

মাঠে ফলাফল যেমনই হোক, এই ডার্বি আবারও প্রমাণ করল কলকাতার ফুটবলে আবেগ, রং এবং লড়াই আজও অটুট। আর দেড় বছর পর সেই আবেগের রং লাল-হলুদেই রাঙল।

মুম্বই বিমানবন্দরে অল্পের জন্য বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল ইন্ডিগো বিমানের যাত্রীরা

Read more

Local News