ভারত-পাকিস্তানের দিকে কড়া নজর আমেরিকার!
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বহু দশক ধরে ওঠানামার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে একাধিক সংঘর্ষ ও কূটনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও দুই দেশের মধ্যে কিছু সময় অন্তর সংঘর্ষবিরতির ঘোষণা হয়। তবে সেটি দীর্ঘস্থায়ী করা সব সময় সহজ হয় না। সম্প্রতি মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো জানিয়েছেন, এই জটিল পরিস্থিতির দিকে প্রতিনিয়ত নজর রাখছে আমেরিকা।
রবিবার এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে রুবিয়ো বলেন, সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা যতটা সহজ, সেটি টিকিয়ে রাখা তার থেকেও অনেক বেশি কঠিন। বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের মতো পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে সংঘাত হলে, তার প্রভাব শুধু উপমহাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই হোয়াইট হাউসের নজর সবসময় এই দুই দেশের পরিস্থিতির ওপর রয়েছে।
গত মে মাসে দুই দেশ সেনা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। টানা চার দিন সংঘর্ষ চলার পর অবশেষে ১০ মে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তাঁর মধ্যস্থতার ফলেই এই যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বাণিজ্যিক প্রস্তাব দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানকে রাজি করিয়েছিলেন তিনি। তবে নয়াদিল্লি প্রথম থেকেই এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে। ভারতের বক্তব্য, সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব এসেছিল পাকিস্তানের দিক থেকেই এবং ভারত তা মেনে নিয়েছিল।
রুবিয়ো সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, “সংঘর্ষবিরতি ভাঙতে খুব বেশি সময় লাগে না। উভয়পক্ষের ইচ্ছাই এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি তারা গোলাগুলি বন্ধ করতে রাজি না হয়, তবে কোনও শক্তিই যুদ্ধ থামাতে পারবে না।” তিনি উদাহরণ হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গও টানেন। সেখানে এখনও পর্যন্ত স্থায়ী যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়নি। তাঁর কথায়, “আমরা এখন স্থায়ী শান্তিচুক্তির স্বপ্ন দেখছি না। অন্তত যুদ্ধ থামুক, সেটাই চাই।”
ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি ছাড়াও রুবিয়ো বিশ্বে অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের কথাও উল্লেখ করেন। কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড, রোয়ান্ডা কিংবা ডিআরসি—যেখানেই যুদ্ধ থামানোর সুযোগ এসেছে, আমেরিকা সেখানে মধ্যস্থতা করেছে। তাঁর মতে, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও সেই প্রয়াস জারি থাকবে।
এদিকে, গত এপ্রিল মাসে জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। সেই অভিযানে পাক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস হয় বলে দাবি করে ভারতীয় সেনা। এর পর থেকেই দুই দেশ সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ট্রাম্পের দাবি, তাঁর হস্তক্ষেপ না হলে পরিস্থিতি পারমাণবিক যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারত। তবে ভারত সেই দাবি মানেনি।
সব মিলিয়ে, ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক ঘিরে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও তা কত দিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। আর তাই হোয়াইট হাউসের নজর সর্বক্ষণ উপমহাদেশের দিকে।
মুম্বই বিমানবন্দরে অল্পের জন্য বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল ইন্ডিগো বিমানের যাত্রীরা

