Monday, December 1, 2025

কিডনির সমস্যার লুকানো সতর্কবার্তা: কোন লক্ষণে সাবধান হবেন

Share

কিডনির সমস্যার লুকানো সতর্কবার্তা!

দিন কয়েক ধরে সুমনের পিঠে ব্যথা হচ্ছিল। প্রথমে ভেবেছিলেন, দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার চাপ বা অতিরিক্ত ধকলের কারণে ব্যথা হচ্ছে। ব্যথানাশক ওষুধে কিছুটা আরাম মিললেও, সমস্যাটি ফের ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা করিয়ে জানা গেল—এই ব্যথার উৎস আসলে কিডনি।

কিডনি মানবদেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যার মূল কাজ শরীর থেকে দূষিত ও অতিরিক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া। পাশাপাশি এটি রক্তে লোহিত কণিকা তৈরিতে সহায়ক হরমোন নিঃসরণ করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিন্তু কিডনি একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তার প্রভাব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে মৃত্যুও হতে পারে।

চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনির রোগ নিঃশব্দে বাড়তে থাকে। অনেক সময় মানুষ ছোটখাটো লক্ষণকে গুরুত্ব দেন না কিংবা বুঝতেই পারেন না। কিডনির কর্মক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে না যাওয়া পর্যন্ত সাধারণত কোনো বড় উপসর্গ দেখা দেয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রক্ত বা মূত্র পরীক্ষাতেই ধরা পড়ে সমস্যা। ফলে লক্ষণ উপেক্ষা করলে রোগ ধরা পড়তে দেরি হয়ে যায়।

কোন লক্ষণে সতর্ক হবেন?

১. পিঠে ব্যথা
যদি শিরদাঁড়ার নীচের দিকে, কোমরের দুই পাশে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন, তবে সতর্ক হতে হবে। বসার ভঙ্গি বা হাড়ের ক্ষয়ের জন্যও এমন ব্যথা হতে পারে, কিন্তু কিডনি সমস্যাজনিত ব্যথার ধরন একটু আলাদা। এটি সাধারণত স্থায়ী হয় বা নির্দিষ্ট বিরতিতে ফিরে আসে। কিডনিতে পাথর, সংক্রমণ বা ফুলে যাওয়ার কারণে এমন ব্যথা হতে পারে।

২. তলপেটে ব্যথা
তলপেটে স্থায়ী ব্যথাও কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবজনিত ব্যথা স্বাভাবিক হলেও, যদি সেই ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, ব্যথানাশকেও সুরাহা না হয় এবং প্রস্রাবের রং বা গন্ধে পরিবর্তন দেখা যায়, তবে কিডনি পরীক্ষা জরুরি। কিডনিতে সংক্রমণ, পাথর বা মূত্র নিঃসরণে বাধা এ ধরনের ব্যথার কারণ হতে পারে।

৩. পেলভিস এলাকায় যন্ত্রণা
তলপেটের যন্ত্রণা যদি পেলভিস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, তবে এটি কিডনির গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। বিশেষত, প্রস্রাব করতে অসুবিধা বা বারবার প্রস্রাবের চাপ থাকা সত্ত্বেও মূত্র বের না হলে এটি বিপদের সংকেত।

কেন আগে থেকে পরীক্ষা জরুরি?

কিডনির অসুখ শুরুতে বোঝা কঠিন হলেও, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে তা প্রাথমিক পর্যায়েই ধরা সম্ভব। রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা কিডনির অবস্থা জানার সবচেয়ে সহজ উপায়। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

যে কোনো দীর্ঘস্থায়ী পিঠ বা তলপেটের ব্যথা অবহেলা না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ, সময়মতো চিকিৎসা নিলে কিডনি সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, কিন্তু অবহেলা করলে তা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

শুল্কযুদ্ধের মাঝেই আমেরিকা সফরে মোদী? ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

Read more

Local News