দিল্লির চাণক্যপুরীতে রবিবার সকালে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কা!
রবিবার সকাল, দিল্লির অভিজাত চাণক্যপুরী এলাকা। শহর তখনও পুরোপুরি জেগে ওঠেনি। কেউ কেউ শরীরচর্চার জন্য হাঁটতে বেরিয়েছেন, রোদমাখা নিরিবিলি রাস্তা তখন একরকম শান্ত। কিন্তু সেই শান্ত সকাল আচমকাই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আচমকা ধেয়ে আসে এক বেপরোয়া এসইউভি। রাস্তায় হাঁটতে থাকা দুই পথচারীকে সজোরে ধাক্কা মারে। এক জন ঘটনাস্থলেই মারা যান, অপর জন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
রাষ্ট্রপতি ভবনের নাকের ডগায় দুর্ঘটনা
চাণক্যপুরীর এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জায়গাটি রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মাত্র দু’কিলোমিটার দূরে। রাজধানীর সবচেয়ে সুরক্ষিত ও অভিজাত এলাকার খুব কাছেই ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিক থেকেও বড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।
কী ঘটেছিল সেই সকালে?
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রবিবার সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন দুই স্থানীয় ব্যক্তি। হঠাৎই দ্রুতগতিতে ছুটে আসে একটি SUV, যা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়েন দু’জনেই। এক জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আরও ভয়াবহ বিষয় হল, সেই মৃতদেহ এক ঘণ্টারও বেশি সময় রাস্তায় পড়ে ছিল, কোনও সাহায্য না পেয়ে। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
চালক মদ্যপ অবস্থায়?
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে গাড়িচালককে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গাড়িটি সদ্য কেনা হয়েছিল এবং নম্বরপ্লেট অনুযায়ী সেটি উত্তরপ্রদেশের। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত চালক গাড়িটি তাঁর বন্ধুর কাছ থেকে নিয়েছিলেন।
গাড়ির ভিতর থেকে মদের বোতল উদ্ধার হওয়ায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, হয়তো চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। যদিও জেরায় অভিযুক্ত যুবক দাবি করেছে, গাড়ি চালানোর সময় হঠাৎ করে তাঁর ঝিমুনি আসে এবং তাতেই তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। পুলিশ এখন মদ্যপানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে মেডিক্যাল রিপোর্ট ও ফরেন্সিক বিশ্লেষণের অপেক্ষায় রয়েছে।
তদন্ত চলছে
ফরেন্সিক টিম দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি পরীক্ষা করছে। চালকের আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে, এবং গাড়ির ভেতরে থাকা সমস্ত আলামত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টাও চলছে, যাতে দুর্ঘটনার আগে ও পরে কী ঘটেছে তা বিশ্লেষণ করা যায়।
প্রশ্ন অনেক
এমন একটি অভিজাত এলাকায়, যেখানে রাষ্ট্রপতি ভবন এত কাছে, সেখানে এই ধরনের ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা একাধিক প্রশ্ন তোলে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, গাড়িচালকের সতর্কতা এবং পথচারীদের নিরাপত্তা— সবই আজ প্রশ্নের মুখে।
এক জন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে আর বাড়ি ফিরলেন না। আর একজন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। শুধু এক মদ্যপ, বেপরোয়া চালকের জন্য। এই ঘটনা যেন আরও এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে রাস্তাঘাট— এমনকি দেশের রাজধানীর বুকে, ভোরের শান্ত সকালেও।
ঘন ঘন প্রস্রাব নয়, আরও অনেক উপসর্গ জানান দিতে পারে ডায়াবিটিস! কী ভাবে বুঝবেন?

