Monday, December 1, 2025

কী ভাবে তৈরি হয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর রণনীতি? দাবার ছক কষার মতো চাল চলেছে ভারতীয় সেনার!

Share

কী ভাবে তৈরি হয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর রণনীতি?

অপারেশন সিঁদুর’—শুধু একটি সামরিক অভিযানের নাম নয়, বরং ভারতীয় সেনার কৌশলী মস্তিষ্ক, স্নায়ু ও সাহসের প্রতীক হয়ে উঠেছে। কী ভাবে এই অভিযান পরিকল্পিত হয়েছিল, কী ছিল তার মূলনীতি—সেটাই তুলে ধরলেন ভারতের স্থলসেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, এক অনুষ্ঠানে।

এই অভিযান নিয়ে আগে মুখ খুলেছিলেন বায়ুসেনাপ্রধান অমরপ্রীত সিংহ। তাঁর কথায়, পাকিস্তানের ছ’টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে ভারত। এরপরই বক্তব্য রাখেন স্থলসেনাপ্রধান। তাঁর ভাষায়, “এই অপারেশন ছিল দাবার মতো—যেখানে প্রতিপক্ষের চাল আগে থেকে আন্দাজ করতে হয়, কিন্তু নিজের চাল দিতে হয় নিখুঁতভাবে।” তিনি বলেন, পুরো শক্তি প্রয়োগ না করেই শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করার রণকৌশল নেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ ‘গ্রে জ়োন অপারেশন’—যেখানে যুদ্ধ আছে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি যুদ্ধও নয়।

‘মাইন্ড গেম’-এও বাজিমাত

জেনারেল দ্বিবেদী পাকিস্তানকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তাঁর কথায়, “এই গোটা অভিযানে একটি বড় ভূমিকা ছিল ন্যারেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের। অর্থাৎ, নিজের মনেই ধরে নেওয়া যে জয় হয়েছে। পাকিস্তান সেটাই করেছে। তারা মনে করছে, তারা জয়ী, কারণ তাদের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল হয়েছেন।” তাঁর মতে, এটা এক প্রকার মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। ঘটনা যা ঘটেনি, তাকেই সত্যি বলে মানতে শেখানো—এই কৌশলেই বেঁচে থাকে পাকিস্তান।

স্বাধীনতা ও ভরসা—রণনীতির মূলে

স্থলসেনাপ্রধান জানান, ২৩ এপ্রিল তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সেখানে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়, “আর নয়। এবার ব্যবস্থা নিতে হবে।” এই সাহসী রাজনৈতিক ভরসাই সেনার মনোবল বাড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

এরপর ২৫ এপ্রিল নর্দার্ন কমান্ডে পৌঁছে তৈরি হয় যুদ্ধ পরিকল্পনা। কী ভাবে, কোন রুটে, কোন লক্ষ্যে আঘাত হানা হবে—তার বিশদ রূপরেখা তৈরি হয়। ৯ মে, সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকিস্তানের সাতটি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। এতে বহু জঙ্গি মারা যায়।

কেন নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’?

এই নামকরণ নিয়েও কথা বলেন জেনারেল দ্বিবেদী। তাঁর কথায়, “এই ছোট নামটার মধ্যেই রয়েছে দেশজ আবেগ। ‘সিঁদুর’ মানেই শক্তি, আত্মবিশ্বাস ও ঐক্যের প্রতীক। এই নাম গোটা দেশকে একসূত্রে বেঁধেছে।”

পটভূমি: এক রক্তাক্ত হামলার জবাব

প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নিহত হন। তার জবাবেই ৯ মে চালানো হয় অপারেশন সিঁদুর। এতে সাময়িকভাবে ভারত-পাক সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

শেষ কথা, ‘অপারেশন সিঁদুর’ কেবল একটি সামরিক প্রতিক্রিয়া নয়। এটি ভারতের কৌশল, ধৈর্য, মনস্তত্ত্ব এবং সাহসের এক যুগপৎ নিদর্শন। যুদ্ধ এখন শুধু মাটির নয়, মস্তিষ্কেরও। আর সেখানে ভারতীয় সেনা বার্তা দিয়েছে—তারা দাবার ঘুঁটি নয়, দাবার খেলোয়াড়

ঘন ঘন প্রস্রাব নয়, আরও অনেক উপসর্গ জানান দিতে পারে ডায়াবিটিস! কী ভাবে বুঝবেন?

Read more

Local News