Monday, December 1, 2025

বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত মডেল শান্তা পালকে ঘিরে জটিলতার জাল, একের পর এক রহস্য উন্মোচিত

Share

বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত মডেল শান্তা পালকে ঘিরে জটিলতার জাল!

এক সময় বাংলাদেশের মডেলিং দুনিয়ায় পরিচিত মুখ ছিলেন শান্তা পাল। দেশে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, কাজ করেছেন সিনেমাতেও। পরে ভারতে এসে পা রাখেন দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রে। কিন্তু সম্প্রতি একাধিক নথির অসঙ্গতি এবং সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের কারণে কলকাতায় তাঁর জীবন ঘিরে তৈরি হয়েছে এক গভীর রহস্য।

গত সপ্তাহে যাদবপুরের কাছে বিক্রমগড় থেকে শান্তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও তিনি ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে কলকাতায় দীর্ঘ দিন বসবাস করছিলেন। তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল গত জুলাইতেই, তবুও তিনি দেশ ছাড়েননি। পুলিশি জেরায় শান্তা জানান, পশ্চিমবঙ্গ শান্তিপূর্ণ, তাই এখানেই থাকতে ভাল লাগে তাঁর। নিজেকে বিবাহিতও দাবি করেন তিনি, যদিও সেই দাবির সত্যতা এখনও যাচাই হয়নি।

তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি হাতে পেয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে দু’টি আধার কার্ড, যেগুলোর নম্বর এক হলেও ঠিকানা আলাদা—একটি কলকাতার, অন্যটি বর্ধমানের। আরও পাওয়া গিয়েছে একটি ভোটার কার্ড, যেটি বর্ধমানের ঠিকানায় জারি করা। পুলিশ ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভোটার আইডির সত্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে।

শান্তার নামে দু’টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টেরও সন্ধান পেয়েছে তদন্তকারীরা, যার একটি একটি বেসরকারি ব্যাংকে। ওই অ্যাকাউন্টে কী ধরনের লেনদেন হয়েছে, কার সঙ্গে আর্থিক যোগাযোগ ছিল, তাও তদন্তের আওতায়।

সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হল, শান্তার নামে রয়েছে চারটি গাড়ি। এগুলো তিনি পর্যটকদের ভাড়া দিতেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ব্যবসা হিসেবে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি, কলকাতায় গেস্ট হাউস খোলারও পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সে জন্য ঋণও নিয়েছিলেন, যদিও সেই ঋণ শান্তার নামে নয়। কীভাবে তিনি ওই ঋণ পেয়েছিলেন, সেই পথও খুঁজছে পুলিশ।

তদন্তে আরও জানা গেছে, শান্তার স্থায়ী বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। ২০২৩ সাল থেকে কলকাতার বিক্রমগড় এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন। মডেলিং এবং অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি পর্যটনের ব্যবসা শুরু করার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। কিছু দিন আগে পার্ক স্ট্রিট এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে এই সূত্রেই তাঁর আলাপ হয়। সেই ব্যক্তি পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, শান্তা ভারতীয় পরিচয় ব্যবহার করে দেশজুড়ে অবৈধ কার্যকলাপ চালাচ্ছেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে—শান্তার এই ভারতীয় পরিচয় কীভাবে তৈরি হল? ভুয়ো আধার এবং পাসপোর্টই বা কোথা থেকে এল? শান্তা কি একা, নাকি এর পেছনে রয়েছে বড় কোনও চক্র?

প্রাথমিকভাবে শান্তা নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন, তবে একের পর এক তথ্য যেভাবে উঠে আসছে, তাতে রহস্য আরও গভীর হচ্ছে। পুলিশের তদন্ত এখন পুরোদমে চলছে। আপাতত, শান্তার অতীত এবং বর্তমানে ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়ে গেছে তাঁর আসল পরিচয় এবং উদ্দেশ্য।

রান্নাঘরে অবশ্যই থাকা উচিত এই পাঁচ মশলা, কেন জরুরি জানেন?

Read more

Local News