Monday, December 1, 2025

নগদকাণ্ড: আগে কেন আপত্তি তোলেননি? বিচারপতি বর্মাকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের, রায়দান আপাতত স্থগিত

Share

নগদকাণ্ড!

‘নগদকাণ্ড’-এর জেরে বিতর্কে জড়ানো বিচারপতি যশবন্ত বর্মার দায়ের করা মামলায় রায়দান স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। তবে শুনানির সময় শীর্ষ আদালত তীব্র প্রশ্ন তোলে—বিচারপতি বর্মা কেন এতদিন অপেক্ষা করলেন? তিনি কেন অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পর এত দেরিতে আদালতের শরণাপন্ন হলেন?

বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসীহর বেঞ্চ জানায়, রিপোর্ট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই যদি বিচারপতি বর্মা আপত্তি জানাতেন, তাহলে বিষয়টি আরও স্বচ্ছভাবে বিচার হতে পারত। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, তাঁর ভূমিকা আত্মবিশ্বাসহীন বলেই মনে হচ্ছে।

এই মামলায় বিচারপতি বর্মার হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি যুক্তি দেন, অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ সংবিধানবিরোধী। কারণ, এই প্রক্রিয়ায় বিচারপতির অপসারণের পথ সুগম করে এমন এক নজির তৈরি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতাকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলতে পারে।

ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছর দোলের দিন, যখন দিল্লি হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি বর্মার সরকারি বাসভবনের স্টোর রুমে আগুন লাগে। দমকল কর্মীরা আগুন নেভাতে গিয়ে সেখানে আধপোড়া টাকার বান্ডিল দেখতে পান। এই ‘নগদকাণ্ড’-এর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তৈরি হয় প্রবল বিতর্ক। পরে তাঁকে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে সরিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে বদলি করা হয়।

এই বিতর্ক ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট একটি তিন সদস্যের অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে, যার রিপোর্ট ৩ মে আদালতে জমা পড়ে। সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খন্না সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে অপসারণ প্রক্রিয়া শুরুর সুপারিশ করেন।

তবে সেই রিপোর্ট আজও জনসমক্ষে আসেনি। এদিন আদালত জানায়, দেশের প্রধান বিচারপতি যদি মনে করেন কোনও বিচারপতি অসদাচরণে লিপ্ত হয়েছেন, তবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর মতামত জানাতে পারেন। কিন্তু এরপর কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়—এ কথা স্পষ্ট করে দেয় আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বিচারব্যবস্থার প্রতি সমাজের আস্থা বজায় রাখতে হলে, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে—এই বার্তাটাই সবচেয়ে জরুরি। তাই বিচারপতি বর্মার আবেদনের শুনানি শেষ হলেও, আদালত আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছে।

এখন দেখার বিষয়, এই মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয় এবং ‘নগদকাণ্ড’ ঘিরে বিচারপতি বর্মার ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোয়।

করিশ্মার কঠিন সময়ে করিনার নীরব শক্তি: কিভাবে দিদিকে পাশে দাঁড়ালেন বেবো?

Read more

Local News