সঞ্জয় কপূরের মৃত্যুর পর ৩০ হাজার কোটি টাকার উত্তরাধিকারের লড়াই!
একটি হঠাৎ মৃত্যু, একটি বিতর্কিত উইল, একটি চিঠি, তিন জন নারী এবং ৩০ হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য— এই নিয়েই তীব্র দ্বন্দ্বে জর্জরিত দিল্লির কপূর পরিবার। করিশ্মা কপূরের প্রাক্তন স্বামী ও শিল্পপতি সঞ্জয় কপূরের অকালপ্রয়াণের পর তাঁর সংস্থা সোনা কমস্টার এবং পারিবারিক সম্পত্তি ঘিরে তীব্র টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।
গত ১২ জুন মৌমাছি গিলে শ্বাসরোধ হয়ে সঞ্জয়ের মৃত্যু হয় বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁর মা রানি কপূর মনে করছেন, এ মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তাঁর অভিযোগ, ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর তাঁর সংস্থা ‘সোনা বিএলডব্লিউ প্রিসিশন ফোরজিংস’ বা ‘সোনা কমস্টার’-এর বার্ষিক সাধারণ সভার আগে সংস্থার অংশীদারদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লেখেন রানি। সেই চিঠিতে তিনি দাবি করেন, ছেলের মৃত্যুর পর মানসিক আঘাতের সময় তাঁকে এমন কিছু কাগজে সই করানো হয়েছে যার অর্থ তিনি বোঝেননি। তাঁর আরও অভিযোগ, তিনি স্বামীর উইলের একমাত্র উত্তরাধিকারী এবং সংস্থার প্রধান শেয়ারহোল্ডার হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে তথ্য থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে এবং সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্তে তাঁকে যুক্ত করা হচ্ছে না।
চিঠিতে রানি লেখেন, “আমাকে তালাবদ্ধ ঘরে নথিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিল।” তাঁর মতে, এই নথিগুলিকে এখন পারিবারিক উত্তরাধিকার ও শেয়ার নিয়ন্ত্রণে অপব্যবহার করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, সংস্থা জানায়, তাদের সব সিদ্ধান্ত কোম্পানি আইন অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে এবং রেকর্ডে রানিকে কোনও অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। তাই তাঁকে সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে যুক্ত করার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ২৫ জুলাই তাঁদের বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছে এবং সেই সভায় সঞ্জয়ের বর্তমান স্ত্রী প্রিয়া সচদেব কপূরকে বোর্ডের নতুন সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি এখন ‘নন-একজিকিউটিভ ডিরেক্টর’ পদে রয়েছেন।
রানির পাঠানো চিঠি ২৪ জুলাই পাওয়ার পরও সংস্থা বার্ষিক সভা স্থগিত করেনি। সংস্থার দাবি, তাঁরা কোনও স্বাক্ষরিত নথি রানির কাছ থেকে পাননি এবং সব সিদ্ধান্ত সঠিক প্রক্রিয়া মেনেই নেওয়া হয়েছে।
এই জটিলতার মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, সঞ্জয়ের উইলে আদৌ কী লেখা আছে, কে তার বৈধ উত্তরাধিকারী? আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনও শেয়ারহোল্ডারের মৃত্যু হলে মনোনীত ব্যক্তি শুধুমাত্র সেই শেয়ারের তত্ত্বাবধায়ক, মূল মালিক নন। বৈধ উত্তরাধিকারীরা না আসা পর্যন্ত ওই শেয়ারের দায়িত্ব তাঁদের হাতেই থাকে।
সঞ্জয়ের প্রথম পক্ষের স্ত্রী করিশ্মা কপূরের দিক থেকেও দাবি উঠেছে বলে খবর। তাঁদের দুই সন্তান সামাইরা ও কিয়ানকে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্জয় ১৪ কোটি টাকার বন্ডে সুরক্ষা দিয়েছিলেন। তবে প্রিয়া ও সঞ্জয়ের সন্তানরা এখনও নাবালক, তাই সংস্থার দায়িত্ব এখন মূলত প্রিয়াই সামলাচ্ছেন।
আপাতত রানি, করিশ্মা ও প্রিয়ার মধ্যে কে হবেন ৩০ হাজার কোটি টাকার উত্তরাধিকারী, তা নিয়ে চলছে আইনি ও পারিবারিক টানাপোড়েন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিবাদ হয়তো গড়াবে আদালত পর্যন্ত এবং দীর্ঘ আইনি লড়াই অনিবার্য।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা উচিত ভারতের? সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের যুক্তিতে কী আছে

