Monday, December 1, 2025

ভারতকে উপেক্ষা করে ইংল্যান্ডেই টানা তৃতীয় বার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, কেন এই সিদ্ধান্ত আইসিসির?

Share

ভারতকে উপেক্ষা করে ইংল্যান্ডেই টানা তৃতীয় বার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল!

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচ—ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এটি শুধুই একটি খেলা নয়, বরং টেস্ট ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণের আসর। অথচ, টানা তৃতীয় বার এই ফাইনালের ভেন্যু হিসেবে ইংল্যান্ডের নাম ঘোষণা করায়, স্বাভাবিকভাবেই হতাশ অনেক ভারতীয় ক্রিকেটভক্ত। প্রশ্ন উঠেছে—ভারতের মতো ক্রিকেটপ্রেমী দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার ইংল্যান্ড? এর পেছনে রয়েছে কিছু বাস্তব এবং কৌশলগত কারণ।

আইসিসির তরফে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, ২০২7 সালের জুন মাসেও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ইংল্যান্ডে। সাউদাম্পটন এবং ওভাল-এর পর এবার লর্ডস সম্ভবত সেই ঐতিহাসিক ম্যাচের আয়োজন করবে। যদিও ভারত ছিল অন্যতম দাবিদার দেশগুলোর মধ্যে, তবুও আইসিসির ‘না’।

আবহাওয়া ও সময়ের সুবিধা

প্রথমত, জুন মাসে উপযুক্ত ক্রিকেটীয় আবহাওয়া বজায় থাকে ইংল্যান্ডে। ভারত কিংবা উপমহাদেশে ওই সময়ে প্রচণ্ড গরম, হুমকি জারি থাকে বৃষ্টি বা ঘূর্ণিঝড়েরও। ফলে ক্রিকেটের নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে ইউরোপীয় দেশগুলির দিকেই ঝুঁকতে হয় আইসিসিকে।

তদুপরি, ইংল্যান্ডের সময়সীমা (GMT) বিশ্বজুড়ে দর্শকদের জন্য সুবিধাজনক। আমেরিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ক্রিকেটভক্তদের জন্য ম্যাচ দেখার সময় ব্যালান্স থাকে। ভারতের বিপরীতে, যেখানে ম্যাচ দেখতে হলে পশ্চিমা দেশগুলিতে রাত জাগা প্রয়োজন, ইংল্যান্ডে ম্যাচ হলে তা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

ভেন্যু হিসেবে লর্ডসের আকর্ষণ

লর্ডস মানেই ক্রিকেটের মক্কা। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর রাজকীয়তা—এই তিন মিলিয়ে টেস্ট ফাইনালের মর্যাদা যেন আরও বাড়িয়ে তোলে লর্ডসের মাঠ। দর্শক টানতেও এটি অনন্য। আইসিসি তাই চায়, এমন গুরুত্বপূর্ণ ফাইনাল যেন হয় এক ঐতিহাসিক পটভূমিতে, যেটি গ্লোবাল ইভেন্ট হিসেবে আকর্ষণ ধরে রাখতে পারে।

ভারত পিছিয়ে কেন?

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও প্রভাবশালী বোর্ড হলেও, কিছু জায়গায় পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া, সেই সঙ্গে বর্ষাকালের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ—এই দুইয়ে জুন মাসে ফাইনাল আয়োজন করা রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া, নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক দিক থেকেও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়।

বিসিসিআই চাইলেও, পুরো বিষয়টি নির্ভর করে আইসিসির সিদ্ধান্ত ও বাণিজ্যিক পরিকল্পনার ওপর। আইসিসি যে এখন গ্লোবাল সম্প্রচার ও দর্শকসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউরোপকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, তা স্পষ্ট।

উপেক্ষার গ্লানি না, বরং প্রস্তুতির ডাক

তবে ভারতীয় দল বা বোর্ডের কাছে এটি কোনও অবমূল্যায়নের বিষয় নয়। বরং, এমন সিদ্ধান্তকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে মাঠে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করাই আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত। যেমনটা আগের দুই ফাইনালেও চেষ্টার ত্রুটি ছিল না, ঠিক তেমনই ২০২7-এও ভারতের লক্ষ্য থাকবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।

শেষ কথা—মঞ্চ যেখানেই হোক, টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য প্রকাশ পায় খেলোয়াড়দের নিবেদন আর লড়াইয়ে। তাই এবারও যদি ভারত পৌঁছায় ফাইনালে, তবেই সেটি হয়ে উঠবে কোটি ভক্তের কাছে চূড়ান্ত সম্মান পুনরুদ্ধারের সুযোগ।

রান্নাঘরের ধোঁয়ার গন্ধ যাচ্ছে না? ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন এই অসুবিধা

Read more

Local News