আবারও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস!
গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির রেশ কাটতে না কাটতেই দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য ফের নতুন সতর্কবার্তা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ঝেঁপে বৃষ্টি নামতে পারে। বিশেষ করে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বীরভূমে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, বঙ্গোপসাগরের উপর একটি নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার জেরেই রাজ্যে নতুন করে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। সেটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এই নিম্নচাপ দক্ষিণবঙ্গের দিকে এগিয়ে আসবে এবং তার প্রভাবেই বাড়বে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।
শুধু তাই নয়, আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ২০ জুলাইয়ের পর থেকেই দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে।
যেসব জেলায় ইতিমধ্যেই মাটির স্যাঁতসেঁতে ভাব বেড়েছে, সেখানে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জল জমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে কৃষি-নির্ভর এলাকাগুলিতে জমিতে জল দাঁড়িয়ে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনাও থাকছে। পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও জলনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই শহরের ড্রেন ও পাম্পিং স্টেশনগুলিকে সতর্ক করেছে। বাসিন্দাদের জল জমে থাকলে দ্রুত পুরসভার হেল্পলাইনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শহরের নিচু এলাকাগুলি যেমন কাশীপুর, তপসিয়া, আনোয়ার শাহ রোড, বেহালা, একাংশ লেকটাউন এলাকায় আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে এই বৃষ্টি আবার অনেকের কাছেই স্বস্তির কারণ হতে পারে। তাপপ্রবাহের রেশ, রোদের তেজ এবং আর্দ্রতার জেরে সাধারণ মানুষ নাজেহাল ছিলেন। সেই তুলনায় একটানা বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অনেকেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই বৃষ্টি কতটা ভারী হবে এবং তা দৈনন্দিন জীবনে কী প্রভাব ফেলবে?
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত মৌসুমী অক্ষরেখা দক্ষিণবঙ্গের কাছাকাছি অবস্থান করছে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের সক্রিয়তায় বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। এই সমস্ত কারণ মিলিয়েই দক্ষিণবঙ্গে এমন আবহাওয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে—আবহাওয়ার আপডেট নিয়মিত দেখে ঘর থেকে বেরনো, বাজ পড়ার সময় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা, এবং প্রবল বৃষ্টির সময় যানবাহন চালাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে। বিশেষ করে স্কুল, অফিসগামীদের ছাতা ও রেইনকোট সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সব মিলিয়ে আবারও ভিজতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ। এবার শুধু অপেক্ষা, প্রকৃতির খেয়ালে ঠিক কতটা ভিজবে আমাদের শহর আর গ্রামগুলি।
রান্নাঘরের ধোঁয়ার গন্ধ যাচ্ছে না? ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন এই অসুবিধা

