গমের জন্য আমেরিকার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ!
বাংলাদেশে চালের পাশাপাশি গমও খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। রুটি, পরোটা থেকে শুরু করে নানা ধরনের পাউরুটি কিংবা বিস্কুট—সবকিছুতেই দরকার পড়ে গমের। আর এই গম আমদানির বড় একটা অংশ এতদিন ধরে রাশিয়া, ভারত কিংবা ইউক্রেনের উপর নির্ভরশীল ছিল। তবে এবার সেই চিত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার।
চাহিদা ও বাজার পরিস্থিতি বিচার করে এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি গম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। এই সিদ্ধান্ত শুধু খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করাই নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কের দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ।
✅ সরকারি স্তরে চুক্তি
জানা গিয়েছে, আমেরিকার সরকারি সংস্থা ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারের সঙ্গে সরাসরি এই চুক্তি করা হচ্ছে। ফলে কোনও মধ্যস্বত্বভোগী বা এজেন্টের ভূমিকা থাকছে না। এই সরাসরি আমদানি প্রক্রিয়াকে বলা হয় “জি-টু-জি” বা গভার্নমেন্ট টু গভার্নমেন্ট চুক্তি। এর মাধ্যমে ৫ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, আমেরিকা বাংলাদেশকে নির্ধারিত মূল্যে গম পাঠাবে। গুণগত মান নিয়েও থাকবে না কোনও আপস। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের গুদামে গমের পর্যাপ্ত মজুত রাখতে এবং বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
📦 কেন এই সিদ্ধান্ত?
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের বাজারে বেশ অস্থিরতা রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক দেশ গম রপ্তানি কমিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমদানির নির্ভরযোগ্য উৎস খুঁজে পাওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।
বিশেষত, ভারত আগেই গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন থেকে আসা গম যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে নিরবচ্ছিন্ন নয়। ফলে আমেরিকার মতো একটি কৃষিনির্ভর দেশ থেকে গম কেনা একদিকে যেমন নিরাপদ, তেমনই দীর্ঘমেয়াদে টেকসইও।
🇺🇸 আমেরিকা কেন?
আমেরিকা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গম উৎপাদনকারী দেশ। তাদের গম মানেও উচ্চমানের এবং নানা আবহাওয়ায় দীর্ঘদিন সংরক্ষণযোগ্য। তাছাড়া, মার্কিন গমে প্রোটিনের মাত্রা তুলনামূলক বেশি, যা খাদ্যগুণেও এগিয়ে।
💬 বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য সময়োচিত ও বাস্তববাদী। কারণ, দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যশস্যের চাহিদাও বাড়ছে। সেই জায়গায় নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক স্তরে কূটনৈতিক সম্পর্কেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মত অনেকের।
🔚 উপসংহার
বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ শুধু দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকেই জোরদার করবে না, বরং তা আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থানকেও আরও দৃঢ় করবে। আমেরিকার সঙ্গে সরকারি স্তরের এই চুক্তি ভবিষ্যতের জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা বলেই মনে করছেন অনেকে।
শেষ কথা— খাদ্য সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ, এবার গম আসবে আমেরিকা থেকে।
শিক্ষার মন্দিরে নিরাপত্তাহীনতা! দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে পুলিশ পিকেট চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ অধ্যাপকরা

