Monday, December 1, 2025

আরজি কর-কাণ্ডে ‘ব্যাচমেট’ বিতর্ক! সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার পরিবার

Share

আরজি কর-কাণ্ডে ‘ব্যাচমেট’ বিতর্ক!

কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হলেও, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত এখনও চলছে। সেই তদন্তে সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে এবার সরব হলেন নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীরা। বুধবার শিয়ালদহ আদালতে শুনানিতে তাঁরা দাবি তোলেন, প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং সিবিআইয়ের সিনিয়র অফিসার সম্পৎ মীনা একই ব্যাচের আইপিএস। এই ‘ব্যাচমেট’ সম্পর্কের কারণে সিবিআই তদন্তে পক্ষপাতিত্ব করছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী ফিরোজ় এডুলজি বলেন, “বিনীত এবং সম্পৎ দু’জনেই ১৯৯৭ ব্যাচের আইপিএস। তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে, তাই সিবিআই ইচ্ছাকৃতভাবে বিনীতের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না।” উল্লেখযোগ্য, ঘটনার সময় কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন বিনীত গোয়েল। সঞ্জয়ের গ্রেফতারের পরেও তাঁর ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে তাঁর অপসারণের দাবিও উঠেছিল। পরে তাঁকে সরানো হয় পদ থেকে।

তবে সিবিআই এই অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়ে আদালতে জানিয়েছে, ব্যাচমেট হওয়া কোনও অপরাধ নয়। সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, “বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে এমন কিছু তথ্য পাওয়া যায়নি যাতে পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তদন্তে ৩২টি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে। সব সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত সঞ্জয়ের ডিএনএ ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া নমুনার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। এর বাইরে আমরা কাউকে অকারণে গ্রেফতার করব না।”

অন্যদিকে, নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, সিবিআই শুধুমাত্র একটি রাস্তার সিসিটিভি দেখেছে। অথচ আরও দু’টি রাস্তা দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো যায়, সেসব খতিয়ে দেখা হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন, অভিযুক্ত যদি গ্রুপ-ডি কর্মী না হয়ে ডাক্তার না হতেন, তাহলে কি একই আচরণ করত সিবিআই? তাঁদের দাবি, চারজন ডাক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

সিবিআই আবারও জানায়, “আমরা শুধু হাসপাতালের ক্যামেরা নয়, বাইরের ট্র্যাফিক ক্যামেরার ফুটেজও পরীক্ষা করেছি। অভিযুক্ত সঞ্জয়কে কলকাতা পুলিশই গ্রেফতার করেছিল। তিনিই প্রথম থেকে এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত। তদন্তের স্বার্থে লাই ডিটেক্টর টেস্টও হয়েছে।”

এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “যত আইএএস, আইপিএস রয়েছেন, তাঁদের অনেকেই পরস্পরের ব্যাচমেট। বন্ধুত্ব থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটাকে নিয়ে এমনভাবে অভিযোগ তোলা ঠিক নয়।”

শিয়ালদহ আদালতের এই শুনানিতে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তের গতি নিয়ে আবারও নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল। নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তাঁরা চাইছেন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত। অন্যদিকে, সিবিআই বারবার দাবি করছে, প্রমাণ ছাড়া কাউকে দোষী বানানো বা গ্রেফতার করা সম্ভব নয়।

পুরো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিনেও এই বিতর্ক নতুন মোড় নিতে পারে।

ভারতের নিজস্ব এআই-স্মার্টফোন ‘NxtQuantum OS’ উন্মোচন – স্বনির্ভরতা ও গোপনীয়তার প্রতিশ্রুত

Read more

Local News