৭১টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম বেঁধে দিল কেন্দ্র!
দেশের সাধারণ মানুষের জন্য ওষুধের খরচ কমাতে বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। এবার ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও পেপটিক আলসার-সহ মোট ৭১টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দিল ‘ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি’ (NPPA)। সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যা সমস্ত ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাকে মানতে হবে।
এই নতুন দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্তের ফলে, সাধারণ খুচরো বাজারে ওষুধ কিনতে গিয়ে অনেকটাই সাশ্রয় হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে একাধিকবার ওষুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয়েছিল। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার ওষুধের খুচরো মূল্য বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কোন কোন ওষুধের দাম কমল?
তালিকায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাম, ক্যানসারের ওষুধ ‘ট্রাস্টুজ়ুমাব’। এটি মূলত মেলাস্ট্যাটিক স্তন ক্যানসার এবং গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। রিলায়েন্স লাইফ সায়েন্সেস সংস্থা এই ওষুধটি তৈরি করে। এবার থেকে এই ওষুধের প্রতি ভায়াল-এর দাম হবে ১১,৯৬৬ টাকা, যা আগে তুলনায় কম।
এছাড়া, পেপটিক আলসারের জন্য ব্যবহৃত ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন, এসোমেপ্রাজ়ল ও অ্যামোক্সিসিলিনের মিশ্রণযুক্ত ট্যাবলেটের দাম ১৬২.৫০ টাকা করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
ডায়াবেটিসের ওষুধের ক্ষেত্রেও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে NPPA। বিশেষ করে সিটাগ্লিপ্টিন-যুক্ত ২৫টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কিছু সংস্থার তৈরি প্যারাসিটামল-এর দামও নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
NPPA নিয়মিত ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে দেশের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধগুলির দাম নির্ধারণ করে থাকে। ২০১৩ সালের ওষুধ মূল্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালার ভিত্তিতেই এই দাম স্থির হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, দাম বেঁধে দেওয়ার মূল লক্ষ্য সাধারণ মানুষের উপর ওষুধের খরচের চাপ কমানো। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলির জন্য এটি বড় স্বস্তির খবর।
এর আগে কী হয়েছিল?
এর আগে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে মোট ৭৪৮টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম ১.৭৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল NPPA। সেই তালিকায় ছিল প্যারাসিটামল, কাশি, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, বাত, ঘুম ও অন্যান্য রোগের ওষুধ। তারও আগে, কাঁচামালের দাম বাড়ায় ২০২৪ সালের অক্টোবরে অ্যাজ়মা, গ্লকোমা, থ্যালাসেমিয়া, যক্ষ্মা-সহ কিছু ওষুধের দাম অন্তত ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছিলেন।
এবার ওষুধের দাম স্থির করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে জনসাধারণের উপর খরচের বোঝা কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন।

