আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে দুর্নীতির মামলায় চার্জগঠন!
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল আলিপুর সিবিআই আদালত। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে ২২ জুলাই থেকে।
এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ৪০৯ (বিশ্বস্ততার ভঙ্গ), ৪৬৭ (জালিয়াতি), ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) এবং দুর্নীতি দমন আইনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন আফসর আলি, বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা এবং আশিস পাণ্ডেও। তাঁরা সকলেই বর্তমানে জেল হেফাজতে আছেন।
সিবিআই তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগ ছিল, চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডারে দুর্নীতি চলত এবং বেশিরভাগ টেন্ডার দেওয়া হতো অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’দের। এর মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে বলে সন্দেহ।
২০২৪ সালের ২৯ নভেম্বর সিবিআই আদালতে প্রথম চার্জশিট জমা পড়ে। তখনই সন্দীপ ঘোষ, আফসর আলি, বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা এবং আশিস পাণ্ডের বিরুদ্ধে নাম উঠে আসে। সিবিআই প্রথমে সন্দীপকে টানা কয়েক দিন জিজ্ঞাসাবাদ করে, পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে বাকিদেরও গ্রেফতার করা হয়।
এই মামলার সঙ্গে আরও একটি বড় ঘটনা যুক্ত রয়েছে। গত বছরের আগস্ট মাসে আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হলে এক চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে উঠে আসে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ। সেই ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয় এবং নিম্ন আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
তদন্ত চলাকালীন এই খুনের মামলার প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ওঠে সন্দীপ ঘোষ এবং তৎকালীন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তাঁদেরও সিবিআই হেফাজতে নেওয়া হয়। তবে খুন ও ধর্ষণের মামলায় পরে জামিন পেলেও, আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সন্দীপ এখনও জেল হেফাজতেই রয়েছেন।
এই প্রেক্ষিতে আলিপুর আদালত চার্জগঠনের নির্দেশ দিয়েছে। বিচার শুরুর দিন হিসেবে ঠিক হয়েছে ২২ জুলাই। ইতিমধ্যেই সন্দীপ ঘোষ ও অন্য অভিযুক্তদের আইনজীবীরা চার্জগঠন পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন হাই কোর্টে। তবে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য মহল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলেও এই মামলার দিকে নজর রয়েছে। কারণ সরকারি হাসপাতালের এই দুর্নীতির ঘটনায় সাধারণ মানুষের পরিষেবা এবং স্বাস্থ্যের উপর কী প্রভাব পড়েছে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
এখন দেখার, বিচার প্রক্রিয়ার পরিণতি কী হয় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদৌ কড়া শাস্তির রায় ঘোষণা হয় কিনা।
দই কাটার পরে যে পাতলা জল বেরোয়, ফেলে দেবেন না! জানুন শরীরে এর উপকারিতা ও সতর্কতা

