দই কাটার পরে যে পাতলা জল বেরোয়!
ফ্রিজ থেকে পাতা দই বের করে দেখেছেন নিশ্চয়ই, দইয়ের ওপর বা কাটার পরে পাতলা একটু হলদেটে জল জমে থাকে। অনেকেই ভাবেন দই বুঝি খারাপ হয়ে গেছে। কেউ সেই জল ফেলে দেন, কেউ আবার খেয়ে নেন দইয়ের সঙ্গে। এই নিয়ে মনেই থেকে যায় সংশয়—এই জল শরীরের পক্ষে ভাল না খারাপ?
পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরীর কথায়, এই পাতলা হলুদ জল আসলে দইয়ের অত্যন্ত উপকারী অংশ। এর নাম ওয়ে প্রোটিন (Whey Protein)। যারা শরীরচর্চা করেন, পেশি গঠনের জন্য যাঁরা প্রোটিন খুঁজছেন, তাঁদের জন্য এই ওয়ে প্রোটিন অত্যন্ত দরকারি।
রেশমীর মতে, দইয়ের জমাট অংশে যেমন কেসিন প্রোটিন থাকে, ঠিক তেমনই এই পাতলা অংশে থাকে ওয়ে প্রোটিন, ল্যাক্টোজ, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য খনিজ। ওয়ে প্রোটিন শরীর দ্রুত শোষণ করতে পারে এবং পেশি ক্ষয় রোধ, ওজন নিয়ন্ত্রণ, হজমের উন্নতি—এই সব দিকেই কাজ করে। বিশেষ করে যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এটি সহায়ক। কারণ এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুব কম, কিন্তু প্রোটিন বেশি।
তবে মনে রাখার বিষয়, অতিরিক্ত ওয়ে প্রোটিন খেলে তারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
রেশমী স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘‘অতিরিক্ত ওয়ে প্রোটিন খেলে কিডনির উপর চাপ পড়তে পারে। বিশেষ করে যাদের কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা আছে, তাদের সতর্ক থাকা উচিত। ত্বকে অ্যালার্জি বা র্যাশও হতে পারে। আবার বেশি খেলে বদহজম বা ওজনও বেড়ে যেতে পারে।’’
তাই, দই কাটার পর যে পাতলা জল দেখা যায়, সেটি মোটেই ফেলে দেওয়া উচিত নয়। বরং বুঝে শুনে, পরিমিতভাবে সেটি গ্রহণ করলে শরীরের উপকারই হবে। যেমন, এক বাটি দইয়ের সঙ্গে সেই জল মিশিয়ে খেতে পারেন, বা চাইলে সেটি আলাদা করে পান করলেও অসুবিধা নেই।
অনেক সময় দেখা যায়, যারা দুধ খেতে পারেন না বা ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্স আছে, তাদের ক্ষেত্রে দইয়ের এই ওয়ে প্রোটিন খাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হয়। কারণ এতে ল্যাক্টোজের মাত্রা কম। তবে সেই ক্ষেত্রেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভাল।
সংক্ষেপে বললে, দই কাটার পরে বেরোনো পাতলা জল দেহের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়। বরং পেশি গঠন, হাড় মজবুত রাখা, হজম ক্ষমতা বাড়ানো ও শরীর সুস্থ রাখতে এটি দারুণ উপকারী।
তবে সব সময় মনে রাখতে হবে—ভালো জিনিসও অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। তাই দইয়ের জল খান ঠিকই, তবে নিজের শরীর বুঝে, পরিমিত পরিমাণে।
বিমানে জ্বালানির সুইচ ত্রুটি! এফএএ সতর্ক করেছিল সাত বছর আগে, গুরুত্ব দেয়নি এয়ার ইন্ডিয়া?

