Monday, December 1, 2025

অধ্যক্ষকে রাস্তায় মার! অপমানে কাঁদলেন, বললেন ‘চাকরি ছেড়ে দেব’— অভিযুক্ত বলল, ‘বাবা হলেও মারতাম’

Share

অপমানে কাঁদলেন, বললেন ‘চাকরি ছেড়ে দেব’!

নদিয়ার চাপড়ায় প্রকাশ্যে নিগৃহীত হলেন এক কলেজের অধ্যক্ষ। পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে গিয়ে রাস্তায় তৃণমূলকর্মীর হাতে মার খেয়ে লাঞ্ছিত হয়ে কেঁদে ফেললেন অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন—চাকরিটা আর রাখতে চান না। সম্ভব হলে বদলি নেবেন, না হলে ইস্তফা দেবেন।

চাপড়া জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করছেন। সম্প্রতি তাঁর নজরে আসে, রাজ্য সড়কের ধারে একাধিক নয়ানজুলি ও ঝোপঝাড় ধ্বংস করে দোকান তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি তাঁকে ব্যথিত করে। পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় সেই এলাকায় বোর্ড টাঙিয়ে দেন, যাতে মানুষ জানেন কোথায় কি ধরনের অনিয়ম হচ্ছে। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই সেই বোর্ড ভাঙচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার তিনি বোর্ডগুলি মেরামত করতে গেলে ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা।

অধ্যক্ষের অভিযোগ, সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল কর্মী অজয় ঘোষ রাস্তায় তাঁকে হেনস্থা ও মারধর করেন। অজয়ের ভাই স্থানীয় হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। ঘটনায় গুরুতর অপমানিত হয়ে পড়েন অধ্যক্ষ। স্থানীয়রা তৎক্ষণাৎ তাঁকে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসার পর তিনি চাপড়া থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অভিযুক্ত অজয়ের বিরুদ্ধে।

হাসপাতার থেকে ছাড়া পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অধ্যক্ষ। সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বলেই ফেললেন, ‘‘আমি পরিবেশ বাঁচাতে গিয়ে মার খেলাম। যাঁদের শিক্ষার আলো ছড়ানোর দায়িত্ব, তাঁদের যদি রাস্তায় এ ভাবে মার খেতে হয়, তা হলে আর কী বলব! ডিপার্টমেন্টকে অনুরোধ করব আমাকে অন্য কোথাও বদলি করে দেওয়া হোক। যদি সেটাও না হয়, তা হলে চাকরিটাই ছেড়ে দেব।’’

ঘটনার চাপে অভিযুক্ত অজয় ঘোষ অবশ্য নিজের দোষ মেনে নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি খুব রেগে গিয়েছিলাম। মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছিল। আমি স্বীকার করছি, ভুল করেছি। আমার তখন মনের অবস্থা ঠিক ছিল না। ওই মুহূর্তে যদি আমার বাবা থাকতেন, তাঁকেও মারতাম।”

এমন মন্তব্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এক জন কলেজের অধ্যক্ষ যখন পরিবেশ নিয়ে সোচ্চার হন, তখন তাঁকে এ ভাবে রাস্তায় মার খেতে হবে কেন? তৃণমূলের তরফে যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও সরকারিভাবে প্রতিক্রিয়া মেলেনি, তবে কলেজ মহলে এবং শিক্ষক সমাজে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

রাজনীতির রং ছাড়িয়ে অনেকেই বলছেন—যে রাজ্যে শিক্ষকরা অপমানিত হয়ে চাকরি ছাড়ার কথা ভাবেন, সেখানে শিক্ষার পরিবেশ আর কতটা সুরক্ষিত?

রাত জাগলেই বাড়ছে হাঁপানির ঝুঁকি! মহিলারা সবচেয়ে বিপন্ন, কারণ লুকিয়ে হরমোন আর উদ্বেগে

Read more

Local News