Monday, December 1, 2025

নেতানিয়াহুর দুর্নীতি মামলার শুনানি স্থগিত, ট্রাম্পের সমর্থনের ছায়া কি পড়ল আদালতের সিদ্ধান্তে?

Share

নেতানিয়াহুর দুর্নীতি মামলার শুনানি স্থগিত!

দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলা শুনানি আচমকাই এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল জেরুজ়ালেমের আদালত। নেতানিয়াহুর আইনজীবী পক্ষ থেকে জাতীয় নিরাপত্তা ও গোপন কূটনৈতিক ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে এই আবেদন জানানো হয়েছিল। যদিও এমন আবেদনের ভিত্তিতে অতীতে শুনানি বাতিল হয়নি, তবুও রবিবার আদালতের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে জল্পনার ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে। বিশেষ করে যখন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বার্তায় নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।

শুধু শুক্রবার নয়, শনিবারও ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে নেতানিয়াহুকে ‘মহান নেতা’ আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কু-কৌশল’ বলে দাবি করেন। এমনকি তিনি প্রশ্ন তোলেন—এই মামলার শুনানির জেরে নেতানিয়াহু যদি ইরান বা হামাসের সঙ্গে আলোচনায় বসতে না পারেন, তা হলে কি ইজরায়েলের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা যাবে? প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্পের এই ধারাবাহিক বার্তার কোনও ছায়া কি আদালতের উপরও পড়েছে?

তবে আদালত তাদের সিদ্ধান্তের পেছনে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ, সেনার গোয়েন্দা শাখা এবং প্রধানমন্ত্রী নিজে কিছু গোপন নথি পেশ করেছেন, যা পর্যালোচনা করে মনে হয়েছে, আপাতত শুনানি স্থগিত রাখা উচিত। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, একই যুক্তিতে আদালত আগেও আবেদন খারিজ করেছিল, তাই হঠাৎ এই অবস্থান বদলের পেছনে রাজনৈতিক চাপ বা আন্তর্জাতিক প্রভাব খুঁজছেন অনেকে।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তিনটি মামলাই দীর্ঘদিন ধরে ইজরায়েলি রাজনীতিকে প্রভাবিত করছে। ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া ‘কেস–১০০০’, ‘কেস–২০০০’ এবং ‘কেস–৪০০০’ নামে পরিচিত এই মামলাগুলির কেন্দ্রে রয়েছে উপহার গ্রহণ, সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ। প্রথম মামলায় বলা হয়েছে, হলিউড প্রযোজক আরনন মিলচ্যানের কাছ থেকে তিন লক্ষ মার্কিন ডলারের উপহার নিয়েছিলেন নেতানিয়াহু ও তাঁর স্ত্রী সারা। তার বিনিময়ে মিলচ্যানের ভিসা সংক্রান্ত সুবিধা ও কর ছাড় পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

দ্বিতীয় মামলায়, ইজরায়েলের শীর্ষ দৈনিক ‘ইয়েদিওত আহারনত’-এর সঙ্গে গোপন সমঝোতার অভিযোগ রয়েছে। সেখানে সরকারপক্ষীয় প্রচারের বদলে এক প্রতিদ্বন্দ্বী সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন নেতানিয়াহু—এমনটাই তদন্তকারীদের দাবি। তৃতীয় মামলায় অস্ট্রেলীয় ধনকুবের জেমস প্যাকারের কাছ থেকেও আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

যদিও নেতানিয়াহু বারবার দাবি করে এসেছেন, এই মামলাগুলি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিরোধীদের চক্রান্ত। এই অবস্থায় আদালতের আচমকা স্থগিতাদেশ তাঁর আইনি লড়াইয়ে সাময়িক স্বস্তি আনলেও, আন্তর্জাতিক মহলে তা নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে: আইনের শাসন নাকি কূটনীতির ছায়া পড়ছে বিচার ব্যবস্থার ওপর?

‘আমার জীবনের চালিকাশক্তি তুমি’ – জন্মদিনে রুক্মিণীকে আদর করে দেব দিয়েছে স্পেশাল শুভেচ্ছা

Read more

Local News