ইংল্যান্ডে ঝড় তুলল বৈভব!
ভারতের জ্যেষ্ঠ দলের ব্যর্থতার ক্ষতে যেন প্রলেপ দিল অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজের প্রথম এক দিনের ম্যাচে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে আনল তারা। নেতৃত্বে আয়ুষ এবং সামনে থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বৈভব সূর্যবংশীর ব্যাটে ভর করেই মাত্র ২৪ ওভারেই ১৭৫ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলল ভারত। ম্যাচটি জিতল ১৫৬ বল বাকি থাকতে—যা দুর্দান্ত আত্মবিশ্বাসেরই বার্তা।
সিরিজ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচে বিশেষ কিছু করতে পারেননি বৈভব। কিন্তু আসল লড়াইতে ফিরে এলেন যেন আরও ধারালো হয়ে। শুরু থেকেই ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বোলারদের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালান তিনি। দুর্দান্ত টাইমিং ও শট সিলেকশনে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে শতরান করা এই ব্যাটার এ দিনও ১৮ নম্বর জার্সি গায়ে চাপিয়ে দেখিয়ে দিলেন নিজের জাত।
ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারেই জ্যাক হোমকে এক ওভারে তিনটি ছক্কা মারেন বৈভব। মাত্র ১৮ বলে পৌঁছে যান ৪৮ রানে। যদিও দুর্ভাগ্যবশত অর্ধশতরান হাতছাড়া করেন তিনি। বাঁ-হাতি স্পিনার রালফি আলবার্টের বলে একটি উঁচু শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। তাঁর ইনিংসে ছিল তিনটি চার এবং পাঁচটি বিশাল ছয়। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি এক ওভার বলও করেন বৈভব, যদিও উইকেট পাননি। তবে শুরুতেই তিনি যেভাবে ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণকে ভেঙে দেন, তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য।
অধিনায়ক আয়ুষও কম যাননি। তিনি ধারাবাহিক ভাবে সিঙ্গল এবং বাউন্ডারি তুলে নিয়ে রান তোলার গতি বজায় রাখেন। দু’টি চমৎকার বাউন্ডারি মারার পর রকি ফ্লিনটফের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। ভারতের দুই ওপেনার ফেরার পর কিছুটা ধাক্কা খেলেও, অভিজ্ঞান কুন্ডুর শান্ত অথচ কার্যকর ইনিংস সব দুশ্চিন্তা মুছে দেয়। ৩৪ বলে অপরাজিত ৪৫ রান করে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন তিনি।
তার আগে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। ওপেনার আইসাক মহম্মদ ২৮ বলে ৪২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। এরপর কিছুটা স্থিতি আনেন রকি ফ্লিনটফ, যিনি প্রাক্তন ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের পুত্র। রকি ৫৬ রান করেন, তবে অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। ভারতের পেস-স্পিন মিলিয়ে বল হাতে দুরন্ত পারফর্ম করেন কণিষ্ক চৌহান (৩ উইকেট), এনান, অম্বরীশ ও হেনিল পটেল (প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট)।
বড়দের লজ্জার হারের ঠিক তিন দিন পরেই ভারতের ছোটদের এমন দাপুটে জয় যেন ভবিষ্যতের আশ্বাস। বৈভব, আয়ুষ, কুন্ডুরা প্রমাণ করে দিলেন, দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এখনও যথেষ্ট উজ্জ্বল।

