এক ‘লেডি কিলার’-এর রহস্য!
ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতের আবহে পশ্চিম এশিয়ার উত্তপ্ত মাটি যেন রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে আরও এক গভীর ষড়যন্ত্রে। একের পর এক ইরানি সেনাকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যু এখন শুধু যুদ্ধের ফল নয়— বরং একটি নারীর ছায়া যেন লুকিয়ে আছে প্রতিটি আক্রমণের পেছনে। তেল আভিভ থেকে পাঠানো এক ইজ়রায়েলি নারী গুপ্তচরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চলছে ভয়ঙ্কর ‘টার্গেট কিলিং’। তাঁকে বলা হচ্ছে— মোসাদের বিষাক্ত অস্ত্র, ‘লেডি কিলার’ ক্যাথরিন পেরেজ শেকড।
🎯 নিশানায় ইরানের শীর্ষ সেনা ও বিজ্ঞানীরা
১৩ থেকে ২১ জুন, মাত্র আট দিনের মধ্যে অন্তত ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং একাধিক আইআরজিসি কমান্ডার নিহত হয়েছেন নিখুঁত হামলায়। কেউ নিহত হয়েছেন বাড়ির ভিতর, কেউ চলন্ত গাড়িতে। এমনকি ইরানের আইআরজিসি প্রধান মহম্মদ হোসেন বাগেরি এবং হোসেন সালামিও মারা যান এই হামলায়। সব জায়গায় ছিল নিখুঁত ‘ইন্টেলিজেন্স’। ইরানের দাবি, এইসব তথ্য এসেছিল সেই নারী গুপ্তচরের কাছ থেকে।
🕵️♀️ কে এই ক্যাথরিন?
ইরানি তদন্তে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফ্রান্স থেকে ইজ়রায়েলি প্রশিক্ষণ নিয়ে ক্যাথরিন তেহরানে ঢুকেছিলেন। শিয়া ধর্ম গ্রহণ করে প্রথমে ভোল পাল্টান, পরে দ্রুত বিশ্বাস অর্জন করেন। আইআরজিসির শীর্ষকর্তাদের পরিবারে তাঁর অবাধ যাতায়াত শুরু হয়। বন্ধুত্বের ছলে তথ্য তুলে দেন মোসাদের হাতে।
💣 গুপ্তচর থেকে ধ্বংসের নকশা
ক্যাথরিনের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করেই ইজ়রায়েল বায়ুসেনা ১৩ জুন ইরানের ‘বাঙ্কার’ ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালায়। মারা যান বাগেরি, সালামি, এরপর ডেপুটি কমান্ডার রশিদ, অ্যারোস্পেস ফোর্স প্রধান হাজিজ়াদে, আরও একাধিক উচ্চপদস্থ সেনা অফিসার। এমনকি পরমাণু সংস্থার প্রাক্তন প্রধান ফেরেউদুন আব্বাসি এবং বিজ্ঞানী সইদ তাবাতাবায়েইও মারা যান টার্গেট হামলায়।
🧠 গুপ্তচরদের নারী ইতিহাসে ক্যাথরিন আরেক কাহিনি
এই ধরনের নারী গুপ্তচরের কথা ইতিহাসে নতুন নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির ভিতর ঢুকে তথ্য পাঠিয়েছিলেন নুর ইনায়েত খান। ঠান্ডা লড়াইয়ে কাজ করেছিলেন ইয়োনা মন্টেগ। মোসাদের হয়ে ১৯৭৩ সালে কাজ করেছিলেন হেবা সেলিম। ক্যাথরিন এখন সেই তালিকার সর্বশেষ ও সম্ভবত সবচেয়ে ভয়ানক সংযোজন।
🛡️ প্রতিরোধে ইরান, তবু সাফল্য পাচ্ছে না
ইরান ক্যাথরিনকে ধরতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ, সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে কমান্ডারদের, কিন্তু থামানো যাচ্ছে না ‘টার্গেট কিলিং’। ২১ জুন আরও দুই কমান্ডার ইজ়াদি ও শরিয়ারি নিহত হন। শরিয়ারি হিজবুল্লা ও হামাসকে অস্ত্র জুগিয়ে আসছিলেন।
🧨 মোসাদের লক্ষ্য কি এবার খামেনেই?
পশ্চিমি মিডিয়া দাবি করছে, মোসাদ এবার আয়াতোল্লা আলি খামেনেই-কে টার্গেট করতে চাইছে। তাঁর উত্তরসূরি বাছার প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে গুঞ্জন।
ক্যাথরিনের ছায়া আরও কত মৃত্যু ডেকে আনবে, তা সময় বলবে। কিন্তু এখনই তিনি হয়ে উঠেছেন এক জীবন্ত আতঙ্ক— একটি গুপ্ত যুদ্ধের নায়িকা।
🚨 “ধৈর্যের সীমা ছাড়াচ্ছে!”: কর্মীদের হুঁশিয়ারি Nothing-র CEO কার্ল পে-র

