Monday, December 1, 2025

বারবার সেনাপ্রধানের পেছনে কেন আমেরিকা? মুনিরকে ঘিরে নতুন চুক্তির ইঙ্গিত কি ইরান-বিরোধী ষড়যন্ত্র?

Share

মুনিরকে ঘিরে নতুন চুক্তির ইঙ্গিত কি ইরান-বিরোধী ষড়যন্ত্র?

ইরান-ইজ়রায়েল উত্তেজনার মাঝে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। বাহ্যিকভাবে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা’ থাকলেও এই বৈঠক ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে দানা বাঁধছে সন্দেহ—এই কি তবে আমেরিকার নতুন মীরজাফর?

পাকিস্তানের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব বরাবরই ওয়াশিংটনের প্রিয়পাত্র। আয়ুব খান, জ়িয়া-উল-হক থেকে পারভেজ় মুশারফ—সবাই কখনও না কখনও আমেরিকার সামরিক বা কূটনৈতিক ‘উপকরণে’ পরিণত হয়েছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন মুনির।

১৯ জুন, ওয়াশিংটনে এক দীর্ঘ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন ট্রাম্প ও মুনির। পরে হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়, বৈঠকে ইরান-ইজ়রায়েল সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও ‘দ্রুত সমাধান’ চাইলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ‘ছায়াযুদ্ধ’ চালানোর এক সূক্ষ্ম কৌশল হতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের লক্ষ্য এখন ইরানকে চাপে রাখা। কিন্তু সরাসরি জড়িয়ে না পড়ে, পাকিস্তানকে ‘সুবিধাজনক ঘাঁটি’ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন তিনি। এর ফলে আফগানিস্তান যুদ্ধের পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মনে করিয়ে দেওয়া যায়, ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত আক্রমণের পর থেকে পাকিস্তান হয়ে উঠেছিল সিআইএ-র কার্যক্ষেত্র—‘অপারেশন সাইক্লোন’ যার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।

ফিল্ড মার্শাল মুনিরের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের এমন আন্তরিকতা কেবলই সৌজন্য নাকি ভূ-রাজনৈতিক শঠতা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে উপেক্ষা করে সেনাপ্রধানের সঙ্গে ব্যক্তিগত বৈঠকই ইঙ্গিত দেয়, ইসলামাবাদের ‘আসল সরকার’ কোথায় বসে।

পাক-সেনার আগেও এমন ‘বিশেষ মর্যাদা’ পেয়েছে—জ়িয়া-উল-হকের আমেরিকা সফর, মুশারফের করাচি বন্দর উন্মুক্ত করা, কিংবা আফগানিস্তানে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে আইএসআই-এর সহায়তায় মার্কিন ছত্রচ্ছায়ায় গড়ে তোলা। সেসব কার্যকলাপে পাকিস্তান ‘বন্ধু’ ছিল কি ‘ঘুষি খাওয়া ভৃত্য’, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।

এখন পরিস্থিতি আরও জটিল। পাকিস্তান পার্লামেন্টে ইরানকে প্রকাশ্যে সমর্থন করলেও, সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকই। তেহরানের আইআরজিসি কমান্ডারের সাম্প্রতিক বক্তব্যে বলা হয়েছে, পাকিস্তান নাকি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে ইজ়রায়েল পারমাণবিক বোমা ফেললে তারাও পাল্টা দেবে। যদিও এই মন্তব্য খারিজ করেছে পাকিস্তান।

এই টানাপড়েনে ট্রাম্পের সঙ্গে মুনিরের বৈঠক নয়া ঘুঁটি সাজাতে পারে। ইতিহাস বলে, আমেরিকা পাকিস্তানকে যতবার ‘ব্যবহার’ করেছে, শেষমেশ ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এবারও কি তাই হবে? না কি মুনির তাঁর পূর্বসূরিদের চেয়েও বড় ‘চুক্তি’ করে ফেলবেন?

এই কূটনৈতিক নাটক এখনো চলছে, যার পরবর্তী দৃশ্য প্রকাশ পাবে তেহরান, তেল আভিভ আর রাওয়ালপিন্ডির রণনীতিতে।

কোভিডের পর নতুন আতঙ্ক! ফুসফুস-কিডনি-মস্তিষ্কে হানা দিতে পারে এই মারণ ছত্রাক

Read more

Local News