দাপট হারানো কংগ্রেস, দুই মেরুতে তৃণমূল ও বিজেপি, আশায় বাম
নদিয়ার কালীগঞ্জে উপনির্বাচনের ঘন্টা পড়ে গিয়েছে। শাসক দল তৃণমূল আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর, বিজেপি কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে, আর অতীতের গৌরব ফিরে পেতে শেষ চেষ্টায় মরিয়া বাম-কংগ্রেস জোট। এক সময়ের শক্ত ঘাঁটি কালীগঞ্জে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট এখন অনেকটাই পিছিয়ে। উল্টো দিকে, যাদের কখনও এখানে তেমন ভিত্তি ছিল না— সেই বিজেপি এখন তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ।
তৃণমূল এবারও প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের কন্যা, শিক্ষিতা ও কর্পোরেট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আলিফা আহমেদকে। রাজ্য নেতৃত্ব বলছে, তিনি এলাকায় যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য মুখ এবং জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কুণাল ঘোষ থেকে জয়প্রকাশ মজুমদার— সকলেই দাবি করছেন, জয়ের ব্যবধান হবে “বিপুল”।
তবে তৃণমূল আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না। টানা প্রচারে ব্যস্ত দলীয় হেভিওয়েট নেতারা। গোটা বিধানসভায় ভোটারদের বার্তা দেওয়া হচ্ছে, কংগ্রেস বা সিপিএমকে ভোট দিলে আসলে লাভ হয় বিজেপির। তাই “তৃণমূলই আসল কংগ্রেস”— এই বার্তাও দেওয়া হচ্ছে গ্রামে গ্রামে।
অন্যদিকে বিজেপি শিবিরে যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে। তারা এই আসনে আগে কখনও জেতেনি, কিন্তু হিন্দু ভোটকে এককাট্টা করে মেরুকরণের রাস্তা ধরেছে। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের মতে, এই ভোট সরকার গঠনের নয়, তাই অনেক তৃণমূল কর্মীও কংগ্রেসকে ভোট দিতে পারেন, আর সেই ফাটলেই জয়ের সম্ভাবনা খোঁজছে গেরুয়া শিবির।
এই প্রচেষ্টায় প্রার্থী আশিস ঘোষের সমর্থনে প্রচারে এসেছেন সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর মতো শীর্ষ নেতা। এমনকি, ১৩টি পঞ্চায়েত এলাকার জন্য বিধায়কদের দায়িত্ব ভাগ করে প্রচার চালানো হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বিজেপি।
একদা কংগ্রেসের দুর্গ কালীগঞ্জে দলটির অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী নিজে মেনে নিচ্ছেন, “আমাদের সংগঠন দুর্বল হয়েছে। ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূল বা বিজেপিতে সরে গিয়েছেন।” যদিও তিনি আশাবাদী যে, সিপিএমের সমর্থন আর পুরনো জনভিত্তির উপর নির্ভর করে কংগ্রেস সম্মানজনক লড়াই দেবে।
বামেরা যদিও বলছে, আসল লক্ষ্য হল মেরুকরণের রাজনীতির মোকাবিলা করা। সিপিএম নেতা সুমিত দে-র কথায়, “মানুষের মধ্যে একটা বিতৃষ্ণা তৈরি হচ্ছে। তাঁরা একটা বিকল্প খুঁজছেন। যদি আমরা সেই মনোভাব ধরতে পারি, তাহলেই আমাদের রাজনৈতিক প্রাপ্তি হবে সবচেয়ে বড়।”
৭৪ বছরের ইতিহাসে এই আসন কংগ্রেস ও বামদের দখলে ছিল ৬৪ বছর। সেই শক্ত ঘাঁটি আজ প্রশ্নের মুখে। এবার দেখা যাক, ইতিহাসের পাতায় কালীগঞ্জ নিজের কোন নতুন অধ্যায় লেখে।
শসা নয়, এবার লাউয়ের রায়তা! পুষ্টিবিদ বলছেন, উপকারে অনেকটাই এগিয়ে ‘লউকি’র ছাপা রেসিপি

