ইঞ্জিন বিকল হয়ে কলকাতায় থামল এয়ার ইন্ডিয়া
ফের বিপাকে এয়ার ইন্ডিয়া। আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো থেকে কলকাতা হয়ে মুম্বইগামী এআই-১৮০ নম্বরের একটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ এলআর বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মঙ্গলবার ভোরে কলকাতায় আটকে যায়। বিমানটির বাঁ দিকের ইঞ্জিনে গোলযোগ ধরা পড়তেই যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নামিয়ে আনা হয়।
বিমানটি সোমবার রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে দমদমের নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছোয়। কলকাতা থেকে মঙ্গলবার রাত ২টোর সময় মুম্বইয়ের উদ্দেশে ফের রওনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বিমান ছাড়ে না। যাত্রীদের ঘন্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
পরিস্থিতি ঘোরালো হয় তখন, যখন পাইলট ঘোষণা করেন, বিমানের বাঁ দিকের ইঞ্জিনে গুরুতর প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়েছে এবং বিমান নিরাপদ নয়। ফলে ভোর ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ সমস্ত যাত্রীকে বিমান থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। বিমানটিকে সরিয়ে টারম্যাকে রাখা হয়, যেখানে এখন ইঞ্জিন পরীক্ষা চলছে।
যাত্রীদের উদ্বেগ আর ভোগান্তি
প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষার পরে নামতে বলা হলে যাত্রীদের অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পাইলটের ঘোষণার পর অনেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তোলেন— একাধিক দুর্ঘটনার পরে কি এখনও এয়ার ইন্ডিয়ার রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি রয়ে গিয়েছে? যদিও সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং কোনও বিপদ ঘটেনি।
সাম্প্রতিক অতীতে বারবার যান্ত্রিক ত্রুটি
এই ঘটনা একা নয়। মাত্র তিন দিন আগেই, রবিবার উত্তরপ্রদেশের হিন্দন বিমানবন্দর থেকে কলকাতাগামী একটি বিমানে ত্রুটি ধরা পড়েছিল। রানওয়েতে দাঁড়ানো অবস্থায় ইঞ্জিন সমস্যার ইঙ্গিত পেয়ে বিমান ছাড়তে দেরি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পরে ত্রুটি সারিয়ে উড়ান চালু করা হয়।
এর আগেও ১২ জুন অহমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ড্রিমলাইনার বিমান ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বিমানটি রানওয়ে ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এক আবাসিক এলাকার উপর ভেঙে পড়ে। মৃত্যু হয় ২৪১ জনের। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
তদন্তে নেমেছে প্রযুক্তি বিভাগ
মঙ্গলবারের এই ত্রুটির তদন্তে নামানো হয়েছে বিমান সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে। গ্রাউন্ড স্টাফ এবং মেকানিকরা বোয়িং ৭৭৭ বিমানের ইঞ্জিনে কী সমস্যা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন। প্রাথমিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে, ইঞ্জিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেন্সর ত্রুটিপূর্ণ ছিল। বিমানটি আপাতত রক্ষণাবেক্ষণে থাকছে যতক্ষণ না তা সম্পূর্ণ নিরাপদ হিসেবে ঘোষিত হয়।
যাত্রীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবছে সংস্থা। অনেকেই দেরিতে হলেও মুম্বই যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন বিমানবন্দরের লাউঞ্জে। কেউ কেউ নিজের মতো করেই অন্য ফ্লাইট বুক করে নেন।
এয়ার ইন্ডিয়ার এই বারবারের যান্ত্রিক সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যাত্রী ও বিমান বিশেষজ্ঞরা। নতুন করে ভরসা ফেরাতে এয়ার ইন্ডিয়ার উচিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থায় আরও জোর দেওয়া, মত পর্যবেক্ষকদের।
বিপন্ন ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোম! পুরুষের ভবিষ্যৎ কি তবে বিবর্তনের ছাঁকনিতে?

