Monday, December 1, 2025

চেনাবের বুকে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধনে কাশ্মীর যাচ্ছেন মোদী, চালু হচ্ছে নতুন বন্দে ভারত ট্রেনও

Share

চেনাবের বুকে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধনে কাশ্মীর যাচ্ছেন!

কাশ্মীরের রাজনৈতিক আবহ, সামরিক টানাপড়েন এবং অব্যাহত উন্নয়ন প্রকল্পের মাঝে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের চেনাব নদীর উপরে তৈরি বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু ‘অঞ্জী ব্রিজ’-এর উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে তিনি সূচনা করবেন কাশ্মীরের জন্য দু’টি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনেরও। এ সফর শুধু এক infrastructural মুহূর্ত নয়, বরং সাম্প্রতিক পহেলগাঁও হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান সংঘাত-পরবর্তী সময়ে মোদীর কাশ্মীর আগমনকে কূটনৈতিক এবং প্রতীকী অর্থেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

চন্দ্রভাগা বা চেনাব নদীর উপরে নির্মিত এই রেলসেতুটি শুধু উচ্চতায় নয়, নির্মাণের প্রযুক্তি ও স্থায়িত্বের দিক থেকেও নজরকাড়া। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১.৩ কিলোমিটার এবং নদীর উপর থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৩৫৯ মিটার, যা আইফেল টাওয়ারের উচ্চতার চেয়েও বেশি। নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা। এই সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিমি গতিতে ট্রেন চলতে পারবে এবং এটি রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও অটুট থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা। নির্মাতাদের দাবি অনুযায়ী, এই সেতুর আয়ু অন্তত ১২০ বছর।

মোদীর সফরে কাটরা থেকে শ্রীনগর এবং শ্রীনগর থেকে কাটরা—এই দুই রুটে বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবার সূচনা হবে। জম্মু ও কাশ্মীরের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি একটি যুগান্তকারী সংযোজন হতে চলেছে। পাশাপাশি, কাটরা থেকেই প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে যাওয়ার মূল বেস ক্যাম্প কাটরাই, ফলে ধর্মীয় ও পর্যটন দিক থেকেও এই এলাকার গুরুত্ব যথেষ্ট।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় ইচ্ছাশক্তির ফলেই কাশ্মীরকে ভারতের মূল রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘ ২৭২ কিলোমিটার পথ জুড়ে উধমপুর-বারামুলা-শ্রীনগর রেল প্রকল্প ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ। এর ফলে উপত্যকা দেশের বাকি অংশের সঙ্গে আরও শক্তিশালীভাবে যুক্ত হবে, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করবে।

তবে এই সফরের তাৎপর্য শুধু উন্নয়নেই সীমাবদ্ধ নয়। এপ্রিলের শেষদিকে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন শহিদ হন। এর পাল্টা জবাবে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানে একাধিক জঙ্গি ঘাঁটিতে পাল্টা আঘাত হানে। টানা চার দিন সংঘাতের পর গত ১০ মে ভারত-পাকিস্তান উভয় পক্ষ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। এই আবহে মোদীর কাশ্মীর সফরকে অনেকেই দেখছেন রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার কৌশল হিসেবে—যেখানে একদিকে জবাবি শক্তির বার্তা, অন্যদিকে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট।

মোদীর উপস্থিতিতে চেনাব ব্রিজ এবং নতুন বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবার সূচনা নিঃসন্দেহে কাশ্মীরের নতুন যুগের দরজা খুলবে, যেখানে সহিংসতা নয়, সংযুক্তি ও উন্নয়ন হবে প্রধান রূপকথা।

বর্ষার আগেই বাইরে রাখা আসবাব ভালো রাখার ৫ সহজ উপায়

Read more

Local News