১২,০০০ সেনার মৃতদেহ বিনিময়ে রাজি রাশিয়া-ইউক্রেন!
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পেছনে প্রায় সাড়ে তিন বছর—তবু আলোচনার টেবিল ছাড়ছেন না রাশিয়া ও ইউক্রেন। অবশেষে ইস্তানবুলে দ্বিতীয় দফার শান্তি বৈঠকে বসে দুই দেশের প্রতিনিধিরা, যেখানে সবচেয়ে মানবিক সিদ্ধান্তটি উঠে আসে: দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে মোট ১২,০০০ সেনার মৃতদেহ বিনিময়ের বিষয়ে। সেই সঙ্গে বন্দি মুক্তি ও আংশিক যুদ্ধবিরতির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এই ঐতিহাসিক বৈঠকটি ঘটে এমন এক সময়ে, যখন রাশিয়ার একাধিক বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ‘স্পাইডার ওয়েব’ নামের ড্রোন হামলা ধ্বংস করে দেয় প্রায় ৪০টি রুশ যুদ্ধবিমান। এত বড় হামলার পরেও দুই দেশের প্রতিনিধিরা এক টেবিলে আলোচনায় বসায় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক সাড়া পড়ে।
ক্ষতবিক্ষত যুদ্ধের মাঝেও আলোচনার আলো
২০২২ সালে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এরই মধ্যে হাজার হাজার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, ধ্বংস করেছে শহর, গ্রাম এবং স্বাভাবিক জনজীবন। এর মধ্যেও নানা সময় বিভিন্ন দেশ শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনা এই প্রথম নয়, তবে এই বৈঠক ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবারের ইস্তানবুল বৈঠকে আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল যুদ্ধবিরতি ও মানবিক বিনিময়। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ জানান, “আমরা বিশ্বাস করি, মূল বিষয়গুলির সমাধান শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, বন্দি মুক্তি ও গুরুতর অসুস্থ ২৫ বছরের কম বয়সি সেনাদের মুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
শর্তবদ্ধ শান্তি: রাশিয়ার ‘স্মারকলিপি’ এবং ইউক্রেনের প্রত্যুত্তর
রাশিয়া তাদের শান্তির শর্ত উল্লেখ করে একটি স্মারকলিপি ইউক্রেনকে পাঠিয়েছে। ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা সেটি পেয়েছেন এবং পর্যালোচনা করে যথাযথ জবাব দেওয়া হবে। একইসঙ্গে জুনের শেষদিকে আবার আলোচনা আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কিয়েভের পক্ষ থেকে।
রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের সহকারী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি জানান, মস্কো দুটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে ২-৩ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়াও ছয় হাজার করে সেনার মৃতদেহ বিনিময়ের বিষয়টি রাশিয়া ইতিমধ্যেই মেনে নিয়েছে।
তুরস্কের আশার আলো: ‘ত্রয়ী’ আলোচনার আহ্বান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই বৈঠককে ‘গঠনমূলক’ বলেই আখ্যা দিয়েছেন। তিনি আরও একধাপ এগিয়ে জানিয়ে দেন, তাঁর ইচ্ছা রাশিয়ার পুতিন, ইউক্রেনের জেলেনস্কি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে একসঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসানোর। তিনি বলেন, “তাঁরা চাইলে আমিও সেই আলোচনায় থাকতে আগ্রহী।”
এখনই যুদ্ধবিরতি নয়, তবু আশার রেখা
যুদ্ধ বন্ধের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত না এলেও মানবিক বিবেচনায় মৃতদেহ ও বন্দি বিনিময়ের মতো সিদ্ধান্তগুলি যুদ্ধের এই কঠিন সময়ে এক টুকরো শান্তির বার্তা বয়ে আনে। আন্তর্জাতিক মহলও আশাবাদী, এই ধাপে ধাপে আলোচনাই একদিন পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির পথ খুলে দেবে।
চাইলে আমি এই নিয়ে টাইমলাইন, ইনফোগ্রাফিক, বা বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন তৈরি করে দিতে পারি।
সারা দিন “স্নান করে বেরোলাম” লুক—কীভাবে পাবেন তরতাজা ও সতেজ চুলের জাদু?

