গুজরাতের মন্ত্রীর দুই পুত্র গ্রেফতার!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বর্ণভূমি গুজরাতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির ধোঁয়া উঠল একদম উর্ধ্বমুখী। রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রীর দুই পুত্র—বলবন্ত এবং কিরণ খাবড়—গ্রেফতারের মাধ্যমে এই দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর পর্দা ফাঁস হলো। অভিযোগ, সরকারি বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকার মধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে, অথচ প্রকল্পের নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন হয়নি।
এই ঘটনার পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘদিনের মামলার ইতিহাস। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দাহোদ থানায় বচুভাই খাবড়ের দুই ছেলে বলবন্ত এবং কিরণের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের সরকারি প্রকল্পের অর্থ হাতে পেয়ে তারা প্রকৃত কাজ না করে বরাত নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই মামলায় পুলিশ তাদের ১৬ মে গ্রেফতার করেছিল এবং তারপর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তারা। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার ঠিক কিছুক্ষণ পরই আবার কিরণকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার বলবন্তকেও একই মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
দাহোদ থানার ডেপুটি পুলিশ সুপার জগদীশসিন ভান্ডারি জানান, বলবন্তের সংস্থাকে সরকারের কাছ থেকে ৩৩.৮৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, সংস্থাটি বরাদ্দকৃত কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করেনি। একই অভিযোগ কিরণের সংস্থার বিরুদ্ধেও রয়েছে।
এই ঘটনা গুজরাতের রাজনৈতিক মহলে বড় ধাক্কা দিয়েছে। কারণ, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পটি মূলত গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে কাজ ও আয় দেয়ার জন্য সরকারি উদ্যোগ। এমন প্রকল্পে দুর্নীতি হলে সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যায়। আর সেই আস্থা ফিরিয়ে আনা রাজনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
রাজ্যের মন্ত্রীর পরিবারের এই দুর্নীতির খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক বিরোধীরা বলছেন, “যেখানে উন্নয়ন ও স্বচ্ছতার কথা বলা হয়, সেখানে মন্ত্রীর পরিবার থেকে এমন দুর্নীতির ঘটনা কতটা বিশ্বাসযোগ্য তা প্রশ্নের মুখে।” অন্যদিকে, বিজেপি শিবির এই ঘটনাকে ‘দুর্বৃত্তদের কাজ’ বলে আখ্যায়িত করলেও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা গুজরাতের সরকারের ভাবমূর্তিতে বড় ধাক্কা হতে পারে, বিশেষত ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে। কারণ, ক্ষমতার অভিমানে এমন দুর্নীতির ঘটনা জনগণের আস্থা নষ্ট করে।
একই সঙ্গে এই মামলায় গ্রেফতারকৃত বলবন্ত ও কিরণের বিরুদ্ধে ৭১ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। যে কারণে পুলিশ তদন্ত আরও তীব্র করছে।
গুজরাতের সাধারণ মানুষও এই খবরের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, “সরকারি প্রকল্পের টাকা যদি সত্যিই স্বচ্ছভাবে ব্যবহার হতো, তাহলে দেশের মানুষ উন্নতির সুফল পেত। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে, বড় বড় দুর্নীতির ঘটনাই রোজকার গল্প।”
এখন দেখার বিষয়, গুজরাত পুলিশ ও প্রশাসন এই মামলায় কতটা দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করতে পারে। কারণ, স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করাই সরকার ও প্রশাসনের মূল চ্যালেঞ্জ।
জামাইষষ্ঠীর ভোজেও অম্বল নয়! পুষ্টিবিদের টিপসেই থাকুন হালকা আর হাসিখুশি 💚

