আলিপুরদুয়ারে সভার আগেই তপ্ত সুর!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন আলিপুরদুয়ার সফরের ২৪ ঘণ্টা আগেই শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক তোপ দাগার পর্ব। একদিকে মোদী সরাসরি আক্রমণ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে দুর্নীতি ও অপশাসনের অভিযোগে, অন্যদিকে পাল্টা তৃণমূল ‘পরিযায়ী পাখি’ বলে কটাক্ষ করে তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের উথলে উঠেছে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েনের পুরনো গল্প।
মোদীর সফর: প্রশাসনিক কাজের মোড়কে রাজনৈতিক বার্তা
বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় ১০১০ কোটি টাকার নগর গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি ভাষণ দেবেন বিজেপির জনসভায়। এটি হবে তাঁর ‘সিঁদুর অভিযান’-পরবর্তী প্রথম পশ্চিমবঙ্গ সফর এবং বিধানসভা নির্বাচনের এক বছর আগে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া সম্ভাব্য উপলক্ষ।
কিন্তু সেই সভার আগের দিন বিকেলেই মোদী তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এনডিএ সরকারের প্রকল্পে খুশি, কিন্তু তৃণমূলের দুর্নীতি ও অপশাসনে ক্লান্ত।” এই মন্তব্যেই শুরু হয় বিতর্কের ঝড়।
তৃণমূলের কটাক্ষ: “পরিযায়ী পাখিরা” ফিরে এলো?
মোদীর মন্তব্যের জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। নিজেদের এক্স হ্যান্ডলে তাঁরা একটি পরিযায়ী পাখির ছবি পোস্ট করে লিখেছে, “যেহেতু পরিযায়ী পাখিরা বাংলায় ফিরে এসেছে, তাই এ বার বলুন তো, রাজ্যের ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া কেন আটকে রেখেছে কেন্দ্র?” সেই পাখির গলায় গেরুয়া উত্তরীয়, তাতে বিজেপির প্রতীক পদ্মফুল—এ যেন রীতিমতো রূপকধর্মী ব্যঙ্গ।
পাল্টা রাজনীতি: “মমতা রাজনীতির ঊর্ধ্বে, মোদী কূপমণ্ডূক”
এই দ্বৈরথে সরাসরি ময়দানে নামেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “যখন আমাদের নেত্রী দেশের স্বার্থে ঐক্যের ডাক দিচ্ছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী রাজ্য আক্রমণে ব্যস্ত। এটা কূপমণ্ডূক রাজনীতি।” তিনি আরও বলেন, যদি তৃণমূলকে রাজনৈতিকভাবে আক্রমণ করা হয়, তাহলে মোদীকেও পাল্টা জবাব পেতে হবে।
জাতীয়তাবাদ বনাম রাজ্য বঞ্চনা
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের ঐক্য ও নিরাপত্তা নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান যথেষ্ট সহনশীল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্দোনেশিয়া সফরে বলেছেন, “আমি বিরোধী দলের প্রতিনিধি হলেও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা এক।” এই অবস্থান তৃণমূলের ‘দেশপ্রেমী’ ভাবমূর্তি তুলে ধরলেও, রাজ্য অর্থ আটকে রাখার অভিযোগে তারা কেন্দ্রকে ছেড়ে কথা বলছে না।
২০২৫-এর মোড় ঘোরানো রাজনীতি?
২০২৫-এ বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে মোদীর এই সফর নিঃসন্দেহে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রামীণ সড়ক—সব কিছুর কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ থাকায় রাজ্য নিজের কোষাগার থেকে অর্থ দিচ্ছে। তৃণমূল এখন সেটাকেই সামনে রেখে মানুষের আবেগকে টানতে চাইছে।
একদিকে জাতীয়তাবাদের আবরণ, অন্যদিকে আঞ্চলিক বঞ্চনার আওয়াজ—এই দুই সুরের দ্বন্দ্বেই গরম হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক আবহ।
৭৫-এ সুদৃঢ়, জিমে ঝড় তুলছেন রাকেশ রোশন! ফিট থাকার ৭টা সিক্রেট এক্সারসাইজ

