Monday, December 1, 2025

গাজায় আগুনের আঁচ: ৮১ নিহতের পরেও অনিশ্চিত যুদ্ধবিরতি, মতবিরোধে উত্তপ্ত আমেরিকা-হামাস সংলাপ

Share

গাজায় আগুনের আঁচ!

গাজা উপত্যকা রক্তাক্ত। ইজ়রায়েলের লাগাতার হামলায় আরও ৮১ জনের প্রাণহানি হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছে বহু শিশুর নামও। আর এই মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে উঠে এসেছে একাধিক পরস্পরবিরোধী বক্তব্য—হামাস একদিকে বলছে তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত, আর অন্যদিকে, আমেরিকা তা পুরোপুরি অস্বীকার করছে। এই দ্বিধা ও দ্বন্দ্বই ফের গাজাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির আশ্বাস নাকি কূটনৈতিক বিভ্রান্তি?

সোমবার সকালে শোনা যায়, আমেরিকার প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে সাড়া দিয়েছে হামাস। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ একটি নয়া যুদ্ধবিরতির খসড়া পাঠান হামাসের কাছে। একটি প্যালেস্টাইনপন্থী সূত্র জানায়, হামাস সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ মোড় নেয় অন্যদিকে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আল জ়াজ়িরা’ জানায়, ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রশাসনের বক্তব্য পুরো ভিন্ন। উইটকফের ঘনিষ্ঠ এক মার্কিন কর্তা স্পষ্ট করে বলেন, “হামাসের এই দাবি অসত্য। এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।”

তবে হোয়াইট হাউসের সূত্র জানাচ্ছে, তারা আপাতত হামাস নয়, বরং ইজ়রায়েলের সঙ্গে সাময়িক সংঘর্ষবিরতির বিষয়ে কথা বলছে। উদ্দেশ্য, যুদ্ধবন্দি মুক্তির বিনিময়ে ভবিষ্যতে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পথ খোলা। এখনও পর্যন্ত এই প্রস্তাবে ইজ়রায়েলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বোমার শব্দে ঢাকা পড়ছে শিশুদের কান্না

যে সময় কূটনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে, ঠিক তখনই গাজা যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। সোমবার ভোররাতে ইজ়রায়েলি বোমা হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৪৬ জন। এর মধ্যে ৩১ জন ছিলেন গাজার ফাহমি-আল-জারজাবি স্কুলে তৈরি একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে। গভীর রাতে, ঘুমন্ত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় শরণার্থীদের। নিহতদের মধ্যে ছিল বহু শিশু। ভয়াবহ সেই ঘটনার মাঝেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় সাত বছরের শিশু ওয়ার্দ শেখ খলিল। কিন্তু একই হামলায় সে হারায় তার মা ও ছয় ভাইবোনকে।

শান্তি আসবে কবে?

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে হামলার পর থেকেই উত্তপ্ত গাজা। যুদ্ধ থামাতে গত জানুয়ারিতে একবার যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছিল দুই পক্ষ। কিন্তু যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে জটিলতা এবং আস্থা ভঙ্গের জেরে মার্চে ফের হামলা শুরু করে ইজ়রায়েল। সেই থেকেই প্রতিদিন গাজা সাক্ষী হয়ে রয়েছে বোমা, মৃত্যু আর ধ্বংসের।

গাজা এখন শুধু যুদ্ধক্ষেত্র নয়, বরং মানবিক বিপর্যয়ের কেন্দ্রস্থল। খাদ্যাভাব, চিকিৎসার অভাব এবং অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কা ঘিরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে গোটা উপত্যকায়।

এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা যে শুধু রাজনৈতিক নয়, মানবিক দায়ও—তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু প্রশ্ন একটাই—যদি পক্ষগুলো একে অপরের বক্তব্যেই আস্থা না রাখে, তবে শান্তির পথই বা খুঁজে পাওয়া যাবে কোথায়?

এশিয়ান কাপে খেলাই এখন লক্ষ্য, সতীর্থদের বার্তা দিলেন মরিয়া সুনীল ছেত্রী

Read more

Local News