ঝড়ের মুখে ইন্ডিগোর বিমান!
গত বুধবার দিল্লি থেকে শ্রীনগরগামী ইন্ডিগোর একটি যাত্রীবাহী বিমান ভয়াবহ ঝোড়ো আবহাওয়ার মুখে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল ছিল যে, বিমানের চালক বাধ্য হয়ে প্রথমে ভারতীয় বায়ুসেনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন পথ পরিবর্তনের অনুমতির জন্য। তবে কেন সেই অনুমতি মেলেনি? আর ঠিক কী ভাবে বায়ুসেনা সাহায্য করেছিল? এবার এ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিল ভারতীয় বায়ুসেনা।
ঘটনার সূত্রপাত হয় পঠানকোটের কাছে, যেখানে ইন্ডিগোর বিমানটি বজ্রপাতপূর্ণ মেঘের মুখে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি দেখে পাইলট বায়ুসেনার ‘নর্দার্ন কন্ট্রোল’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে জানানো হয়, পশ্চিম দিকে, অর্থাৎ পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশের অনুমতি নেই। কারণ, পহেলগাঁও হামলার ঘটনার পরে পাকিস্তান এখনও ভারতের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ রেখেছে।
এরপর বিকল্প পথে বিমান ঘোরানোর চেষ্টা চালানো হয়। বায়ুসেনা দিল্লির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে দেখে, ওই দিকে ঘোরানো সম্ভব কিনা। এমন পরিস্থিতিতে ইন্ডিগো পাইলটকে লাহোরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করারও অনুমতি দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। কিন্তু পাকিস্তান সেদিক থেকেও অনাপত্তি জানায়নি।
শেষ পর্যন্ত আর কোনো বিকল্প না থাকায়, পাইলট ঝুঁকি নিয়েই বজ্রগর্ভ মেঘের মধ্য দিয়ে বিমান চালিয়ে নিয়ে যান শ্রীনগরের দিকে। বিমানে তখন ২০০-র বেশি যাত্রী ছিলেন। শ্রীনগর বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করতে পারলেও, বিমানটির সামনের অংশ, অর্থাৎ ‘নাক’ ভেঙে যায়।
ডিজিসিএ জানিয়েছে, ওই মর্মান্তিক পরিস্থিতির মধ্যেও ইন্ডিগোর দুই পাইলট অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন। তবে বিমান নিরাপত্তা নিয়ম মেনেই তদন্ত শুরু হয়েছে। জানা গেছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাইলট দু’জনকে ফ্লাইট থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তাঁদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী রামমোহন নায়ডুও সরব হয়েছেন। তিনি পাইলটদের প্রশংসা করে বলেন, “ওই আবহাওয়ার মধ্যে এমন দক্ষতার সঙ্গে বিমান নামানো সহজ ছিল না। তাঁদের কুর্নিশ জানাই। যাত্রীরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদ—এটাই বড় সান্ত্বনা। তবে কী হয়েছিল, সেটা জানা জরুরি।”
এই ঘটনায় স্পষ্ট, শুধু আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাই নয়, আকাশপথে প্রতিটি সিদ্ধান্ত কতটা জটিল ও সংবেদনশীল তা বোঝা যায়। মানবিকতা, কৌশল আর কূটনীতির মাঝপথে দাঁড়িয়ে, এমন মুহূর্তে শুধু দক্ষ পাইলট নয়, গোটা বিমান পরিবহণ ব্যবস্থার উপরই নির্ভর করে শতাধিক প্রাণের নিরাপত্তা।
আপনার জিমেল আইডি কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? সতর্ক না হলে বিপদ ডেকে আনতে পারেন!

