Monday, December 1, 2025

কেশবের পরে কে? মাওবাদী নেতৃত্বে সোনু না তিরুপতি, নতুন মুখ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে

Share

মাওবাদী নেতৃত্বে সোনু না তিরুপতি!

ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের গভীর জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন সিপিআই (মাওবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজ। তাঁর মৃত্যুর পর সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। দুই প্রভাবশালী নেতার নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে—একজন মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে সোনু, অন্যজন থিপ্পিরি তিরুপতি ওরফে দেবুজি।

এই দুই নেতাই তেলঙ্গানার করিমনগর জেলার বাসিন্দা এবং সিপিআই (মাওবাদী)-এর পলিটব্যুরোর সদস্য। বর্তমানে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের তালিকায় তাঁরা সবচেয়ে অভিজ্ঞ এবং সক্রিয় মুখ। এক দিকে সোনু, যিনি প্রয়াত মাওবাদী নেতা কিষেণজির ভাই এবং দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের তাত্ত্বিক ও আর্থিক কৌশল দেখছেন। অন্য দিকে তিরুপতি, যিনি মাওবাদীদের ‘দলিত মুখ’ হিসেবে পরিচিত এবং দীর্ঘদিন ধরে গেরিলা বাহিনী PLGA-র নেতৃত্ব দিয়েছেন।

২০১৯ সালে প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মুপ্পালা লক্ষ্মণ রাও ওরফে গণপতির কোনও খোঁজ নেই। ফলে বেঁচে থাকা পলিটব্যুরো সদস্যদের মধ্যে শুধু তিনজনই এখন ‘সক্রিয়’। সোনু ও তিরুপতির পাশাপাশি তৃতীয় সদস্য মিসির বেসরা বর্তমানে মাওবাদীদের ‘ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরো’র দায়িত্বে রয়েছেন। এটি ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও রাঢ়বঙ্গ অঞ্চলজুড়ে সক্রিয়।

এই প্রেক্ষাপটে সাধারণ সম্পাদকের পদে কে বসবেন, তা শুধু নেতৃত্ব নয়, গোটা সংগঠনের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণ করতে পারে। কেশবের নেতৃত্বে সংগঠন যেমন সশস্ত্র লড়াইয়ে জোর দিয়েছিল, তেমনি সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে শান্তি আলোচনার প্রস্তাবও এসেছে। জানা গেছে, এই প্রস্তাবের পিছনে সোনুর বড় ভূমিকা ছিল। হায়দরাবাদে পলিটব্যুরোর বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অন্যদিকে, তিরুপতি ২০১০ সালের দান্তেওয়াড়ার ভয়াবহ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। সেই হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ৭৪ জন সিআরপিএফ জওয়ানের। কেশবের আমলে মিলিটারি কমিশনের দায়িত্ব ছিল তাঁর হাতেই। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এই দলিত নেতা সংগঠনের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য। ফলে অনেকেই মনে করছেন, তিরুপতি হয়তো সোনুর তুলনায় বেশি সমর্থন পাবেন।

তবে ঘটনা মোড় নিচ্ছে আরও জটিল দিকে। সোনুর স্ত্রী বিমলা ওরফে তারাক্কা সম্প্রতি আত্মসমর্পণ করেছেন। মাওবাদী মহলে আত্মসমর্পণকে নেতিবাচক চোখে দেখা হয়, ফলে এটি সোনুর নেতৃত্বে আসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, মাওবাদীরা যদি অস্ত্র না ছাড়ে, তবে আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই তাদের নির্মূল করা হবে। এই প্রেক্ষাপটে নতুন সাধারণ সম্পাদক দলের ভবিষ্যৎ কৌশল ঠিক করবেন—আলোচনার পথে হাঁটবেন, না কি আরও রণসজ্জা?

সব মিলিয়ে, কে হবেন কেশবের উত্তরসূরি—বুদ্ধিজীবী নেতা সোনু, না কি যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশলবিদ তিরুপতি? এই প্রশ্নের উত্তরই ঠিক করে দেবে, ভারতের মাওবাদী আন্দোলনের আগামী রূপরেখা।

বার্লি আর চিয়ার জল: কিডনির যত্নে সুস্বাদু ওজন কমানোর নয়া উপায়

Read more

Local News