মোহনবাগান ক্লাবের আসন্ন নির্বাচনে উত্তেজনা তুঙ্গে। সচিব পদে পুনরায় প্রার্থী দেবাশিস দত্ত হঠাৎ এক বিস্ফোরক প্রস্তাব দিয়ে চমকে দিলেন সবাইকে। জানালেন, “টুটু বসু যদি সচিব হতে চান, আমি ভোটে দাঁড়াব না।” তবে সঙ্গে জুড়ে দিলেন শর্ত, “উনি লিখিত দেবেন, ছ’মাস পর ওঁর ছেলে সৃঞ্জয় বসুকে পদে বসাবেন না।”
এই প্রস্তাবে সম্মতি তো দূরে থাক, ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিলেন সৃঞ্জয় বসু। বললেন, “এটা নির্বাচন ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা। আমি ও আমার দল গত দু’মাস ধরে প্রচারে ব্যস্ত। এখন এই ধরনের প্রস্তাব দিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে চাইছে।” ফলে ‘শান্তিচুক্তি’র সম্ভাবনা কার্যত নস্যাৎ।
মোহনবাগানের অন্দরে নির্বাচনের এই দ্বন্দ্ব ঘিরে ফুটে উঠেছে বসু পরিবারের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনও। টুটু বসু সরাসরি নাম না করলেও দেবাশিসকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, “ও মিত্র পরিবারকে ধ্বংস করেছে, আমার আর অঞ্জনের সম্পর্ক নষ্ট করেছে।” তবে দেবাশিস পাল্টা বলেন, “উনি বাবা, বকতেই পারেন। আমি বিশ্বাস করি, এসব উনি চাপের মুখে বলেছেন। যখন টুটু’দার পরিবার ২০১৪-তে সমস্যায় পড়েছিল, আমিই পাশে ছিলাম।”
একই সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে ঐতিহাসিক ‘সেনবাড়ি’র প্রসঙ্গও। বাগানের আঁতুড়ঘর হিসেবে খ্যাত এই ভবনে ক্লাব অফিস খোলার পরিকল্পনা নিয়ে এখন দুই শিবিরের মধ্যে টানাটানি চলছে। যদিও আইনি জটিলতায় তা আপাতত থমকে, তবুও উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে বাস্তবায়নের আশাবাদী। দেবাশিস বলেন, “আমি নির্বাচিত না হলেও সৃঞ্জয়কে এই কাজে সহযোগিতা করব। মোহনবাগানই আমাদের একমাত্র পরিবার।”
রাজনীতির রংও ছড়িয়েছে এই নির্বাচনকে ঘিরে। দুই প্রার্থীই শাসক দলের সমর্থনপুষ্ট হলেও নিজেদের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা। ফিরহাদ হাকিম, অতীন ঘোষ, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ ভৌমিক, অরূপ রায়— সব পক্ষেই পরিচিত মুখ। যদিও দেবাশিস বলছেন, “এখানে রাজনীতির রং লাগানো ঠিক নয়। যাঁরা পাশে রয়েছেন, তাঁরা আগে মোহনবাগানের সদস্য বা সমর্থক।”
বৃহস্পতিবার দেবাশিসের পক্ষ থেকে একটি নির্বাচনী পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়, যেখানে বিগত তিন বছরে ক্লাব পরিচালনায় তাঁর অবদান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে। একই দিনে পাশে দেখা গেল প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও, যিনি কিছু দিন আগেই সৃঞ্জয়ের প্রচারে ছিলেন। প্রসূনের কথায়, “আমার পরিবার একটাই — মোহনবাগান।”
এই ভোটে যে শুধু নির্বাচন নয়, মোহনবাগানের ঐতিহ্য, আবেগ ও নেতৃত্বের ভবিষ্যৎও নির্ধারিত হতে চলেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
বার্লি আর চিয়ার জল: কিডনির যত্নে সুস্বাদু ওজন কমানোর নয়া উপায়

