কলকাতার আকাশে রহস্যময় ড্রোন!
সোমবার রাতের কলকাতা— স্বাভাবিক ব্যস্ততা শেষে শহর যখন একটু একটু করে শান্ত হচ্ছে, ঠিক তখনই শহরের আকাশে চোখ কপালে তোলার মতো দৃশ্য! একে একে দেখা গেল একঝাঁক অজানা ড্রোন উড়ে বেড়াচ্ছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঞ্চলের উপর দিয়ে। কোথা থেকে এল এই ড্রোনগুলো? কেনই বা তারা ঘুরে বেড়াল এমন সব এলাকায় যেখানে বিমানচলাচল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত? প্রশ্নের ভিড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার রাতে শহরের নানা প্রান্তে, বিশেষ করে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড এবং বিজয় দুর্গ (ফোর্ট উইলিয়াম) সংলগ্ন এলাকায় ড্রোনগুলিকে উড়তে দেখা যায়। এই অঞ্চলের বিশেষত্ব, ফোর্ট উইলিয়াম একটি সেনা ঘাঁটি এবং ‘রেড জোন’ হিসাবে চিহ্নিত— যেখানে কোনও ধরনের ড্রোন ওড়ানো আইনত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে কলকাতা পুলিশ এবং সেনা কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, ড্রোনগুলির গতিপথ মূলত মহেশতলা অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে শহরের কেন্দ্র হয়ে সেনা দুর্গের দিকেই ছিল। এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিনা অনুমতিতে ড্রোন ওড়ানো নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উঠছে প্রশ্ন।
বর্তমানে ড্রোন নানা কাজে ব্যবহৃত হয়— বিয়ে বা অনুষ্ঠান কাভারেজ, সিনেমার শ্যুটিং, এমনকি পুলিশের নজরদারিতেও। কিন্তু সোমবার রাতের এই ড্রোনগুলি ঠিক কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছিল, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় রহস্য।
পুলিশ জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে সেনা বাহিনীকেও জানানো হয়েছে এবং গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি নিছক গুজব হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ড্রোন হানার খবর সামনে এসেছিল। পাকিস্তান থেকে ভারতের ভূখণ্ডে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি ও অস্ত্র ফেলার চেষ্টার কথা জানিয়েছে সেনা বাহিনী। সেই আবহেই কলকাতার মতো বড় শহরের বুকে এমন ঘটনা অনেকের মনেই সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।
একাংশের মতে, হয়তো কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা অনুমতি ছাড়াই বিনোদনের উদ্দেশ্যে ড্রোন উড়িয়েছে। আবার আরেক পক্ষের মতে, এমনটা হলে সেনা ঘাঁটির উপরে তা এতদূর উড়ে যেতে পারত না।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, সব তথ্য যাচাই করে যথাসময়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানানো হবে। আপাতত শহরের নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা কী, আদৌ কোনও আশঙ্কার কারণ রয়েছে কি না, তা সময় বলবে। তবে শহরের আকাশে এমন রহস্যময় ড্রোনের ঘোরাফেরা নিঃসন্দেহে চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের কাছে। এখন অপেক্ষা, তদন্তে কী বেরিয়ে আসে।
দেশপ্রেমের নজির: ৫০ লক্ষের প্রস্তাব ফিরিয়ে রাহুল বৈদ্যের তুরস্কে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত

