ইজরায়েল-ইরান উত্তেজনা!
বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে ফের ঘনীভূত হচ্ছে ইজরায়েল-ইরান সংঘাতের মেঘ। মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে আশঙ্কা, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে যে কোনও সময় আঘাত হানতে পারে ইজরায়েল। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে ইরান-আমেরিকা সম্পর্ক, আর সেই সম্পর্কের ছায়াতেই ইজরায়েলের আগ্রাসী কৌশলের ইঙ্গিত দেখছেন অনেকে।
‘সিএনএন’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ইজরায়েল বর্তমানে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও ইজরায়েল সরকার এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবুও মার্কিন গোয়েন্দারা বলছেন, বিগত কয়েক মাসে ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিগুলির উপর ইজরায়েলের নজর এবং আগ্রাসনের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বহুস্তরীয় রাজনীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে ‘পারমাণবিক চুক্তি’ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছে। কিছুদিন আগেই আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন, তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করছে। এরপর থেকেই ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক চাপ আরও বেড়ে যায়।
তবে এই চাপের রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ইরানকে নিয়ে তাঁর অবস্থান আগের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। চুক্তির বিষয়ে কখনও কড়া হুঁশিয়ারি, তো কখনও সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব— দুই রকম পথে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন তিনি। এমনকি, মার্চ মাসে ট্রাম্প নাকি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খামেনেইকে একটি ব্যক্তিগত চিঠিও পাঠিয়েছিলেন, যেখানে পারমাণবিক সমঝোতার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেন।
কিন্তু ইরানও নিজের অবস্থানে অনড়। তাদের সাফ কথা, হুমকি দিয়ে নয়, যুক্তি দিয়ে আলোচনা করতে হবে। আমেরিকার অনুমতির অপেক্ষায় তারা বসে নেই। এই মনোভাবই নতুন করে উত্তেজনার ঘনঘটা বাড়াচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে।
এই টানাপোড়েনের আবহে ইজরায়েলের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। দিন কয়েক আগেই ওয়াশিংটন থেকে সাফ জানানো হয়, তারা ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে দেবে না। সেই হুঁশিয়ারির পাল্টা জবাব দেন খামেনেই, বলেন— “আমরা আমাদের নিয়মেই চলি। আমেরিকার অনুমতির দরকার নেই।”
এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, ইজরায়েলের সম্ভাব্য আক্রমণ কি শুধুই প্রতিরক্ষা কৌশল, নাকি এর পেছনে রয়েছে আমেরিকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য? আর ট্রাম্পের সক্রিয় ভূমিকা কি কূটনৈতিক আলোচনাকে ঠেলে দিচ্ছে সংঘাতের দিকেই?
দেশপ্রেমের নজির: ৫০ লক্ষের প্রস্তাব ফিরিয়ে রাহুল বৈদ্যের তুরস্কে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত

