ফের উত্তপ্ত কাশ্মীর!
কাশ্মীরের মাটিতে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বৃহস্পতিবার ভোর হতেই দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার ত্রাল এলাকায় জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পেয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী। অভিযানে বেরিয়ে পড়তেই জঙ্গিদের গুলির মুখে পড়ে বাহিনী। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশ ও সেনা। এখনও চলছে গুলির লড়াই—এমনটাই জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
ত্রাল এলাকায় যে জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে, তারা পাকিস্তানপন্থী জঙ্গি সংগঠন জইশ-এ-মহম্মদের সদস্য বলেই সন্দেহ। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, অন্তত দু’ থেকে তিন জন জঙ্গি ওই এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে, গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলে যৌথবাহিনী। ভোর থেকেই শুরু হয় জোর তল্লাশি। সেই সময়ই জঙ্গিরা হামলা চালায়, আর শুরু হয় এনকাউন্টার।
এই ঘটনাটি গত ৪৮ ঘণ্টায় কাশ্মীর উপত্যকায় দ্বিতীয় এনকাউন্টার। এর আগে মঙ্গলবার সকালে সোপিয়ানে গুলির লড়াইয়ে তিন জঙ্গি নিহত হয়। সেই অভিযান শুরু হয়েছিল কুলগাঁও থেকে, পরে সেখান থেকে সরিয়ে আনা হয় সোপিয়ান জেলায়। ওই অভিযানে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে দু’জন—শাহিদ কুট্টে ও আদনান সফি—লস্কর-এ-ত্যায়বা নামক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য বলে জানা গেছে।
এই দুই এনকাউন্টার কাকতালীয়ভাবে ঘটেনি। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলায় জঙ্গি খোঁজার তল্লাশি আরও জোরদার হয়েছে। উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের উপর হামলায় বেশ কয়েকজন শহিদ হন। সেই ঘটনার পর থেকেই ভারতীয় সেনা বড়সড় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেয়।
গত ৬ মে রাতে চালানো হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই অভিযানে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের ভেতরে থাকা ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় ভারতীয় সেনা। একই সঙ্গে পহেলগাঁও কাণ্ডে জড়িত জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে জোরকদমে। সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগ যৌথ ভাবে কাজ চালাচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই প্রকাশিত একটি ভিডিয়োয় দেখা গেছে, পুলওয়ামার রাস্তায় পহেলগাঁও কাণ্ডে অভিযুক্ত জঙ্গিদের ছবি-সহ পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে ২০ লক্ষ টাকার পুরস্কার—যে কেউ এই জঙ্গিদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিলে পাবেন সেই পুরস্কার।
কাশ্মীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশি অভিযান এবং এনকাউন্টার চলাকালীন যাতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে দিকেও কঠোর নজর দেওয়া হচ্ছে।
এই মুহূর্তে উপত্যকাজুড়ে আতঙ্ক থাকলেও, সেনা বাহিনী ও পুলিশ তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গি দমন ও নিরাপত্তা রক্ষার লক্ষ্যে। পরিস্থিতি এখনও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তবে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, অপারেশন চলবে যতক্ষণ না শেষ জঙ্গিটিও ধরা পড়ে বা নিস্ক্রিয় করা যায়।
পাকিস্তানি ভাইবোনদের উদ্দেশে রণবীরের পোস্ট কেন মুছলেন? বিতর্কের মধ্যে সাফাই দিলেন অভিনেতা

