থেমে গেল ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার শুনানি!
ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে বহু চর্চিত স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ২৬ হাজারেরও বেশি চাকরি বাতিলের মামলায় নতুন করে শুনানির পথ আপাতত বন্ধ। কারণ, এই মামলার রিভিউ বা রায় পুনর্বিবেচনার শুনানি শুরু হওয়ার আগেই অবসর নিলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। ফলে তাঁর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই আবেদন আর উঠল না।
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে এসএসসির মাধ্যমে ২০১৬ সালের প্যানেলে নিযুক্ত হওয়া ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল করে দেয়। কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে প্রধান বিচারপতি খন্নার বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ওই নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। এর পর থেকেই রাজ্য সরকার এবং এসএসসি প্রবল চাপে পড়ে। তারা জানায়, শীর্ষ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানানো হবে।
সেই অনুযায়ী, রায়ের এক মাসের মাথায় অর্থাৎ ৩ মে, সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেনি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে থাকে—বিদায়ী প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আদৌ এই শুনানি হবে কি না। এ দিকে, মঙ্গলবার ছিল বিচারপতি খন্নার কর্মজীবনের শেষ দিন। অনেকেই ধরেই নিয়েছিলেন, অবসরের দিন তিনি নতুন কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন না। সেই জল্পনাই বাস্তবে রূপ নিল।
তবে এর আগে একটি সাময়িক স্বস্তির রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের অনুরোধে আদালত জানায়, যাঁদের নিয়োগে অসঙ্গতির প্রমাণ নেই, তাঁরা ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে শিক্ষকতার কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। এই ছাড় মিলেছে শুধু নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকদের জন্য। তবে শিক্ষাকর্মীরা এই সুবিধার আওতায় পড়েননি।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের আশা ছিল, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে মামলাটি পুনরায় শোনা যাবে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা আপাতত শেষ হয়ে গেল। এখন এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে নতুন প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তের উপর।
বুধবার দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন বিচারপতি বিআর গবই। তিনি দেশের দ্বিতীয় তফসিলি জাতিভুক্ত প্রধান বিচারপতি হবেন। এর আগে ২০০৭ সালে কেরলের বিচারপতি কেজি বালকৃষ্ণণ প্রথম এই মর্যাদা পেয়েছিলেন।
প্রথা অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির উত্তরসূরি হিসেবে নাম সুপারিশ করার দায়িত্ব ছিল বিচারপতি খন্নার উপর। তিনি সেই অনুযায়ী বিচারপতি গবইয়ের নাম প্রস্তাব করেছিলেন, যা গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক।
সুপারিম কোর্টে যে ২৬ হাজার চাকরি নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে, তার সমাধান এখন নতুন প্রধান বিচারপতির কোর্টে নির্ধারিত হবে। ঠিক কোন বেঞ্চে, কবে এই শুনানি হবে—তা এখনও নির্দিষ্ট হয়নি। তবে হাজার হাজার পরিবারের ভবিষ্যৎ এখন শুধুই অপেক্ষা ও অনিশ্চয়তার উপর দাঁড়িয়ে।
ফের জৈসলমের! নতুন রহস্যের পর্দা ফাঁস করতে যাচ্ছেন সব্যসাচী, সঙ্গী মেঘলা

