Monday, December 1, 2025

নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা: পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে শহিদ ভারতীয় জওয়ান, পাল্টা জবাব দিল ভারত

Share

পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে শহিদ ভারতীয় জওয়ান

জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC) ঘিরে ফের একবার তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের ধারাবাহিক গোলাবর্ষণে শহিদ হয়েছেন এক ভারতীয় সেনা জওয়ান, আর তার জবাবে পাল্টা কড়া প্রত্যাঘাত করেছে ভারতীয় সেনাও। গোটা পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে নয়াদিল্লি।

বুধবার সকালে জম্মুর পুঞ্চ জেলার কৃষ্ণা ঘাঁটিতে টহল দেওয়ার সময় পাকিস্তানের ছোড়া মর্টারের আঘাতে গুরুতর জখম হন ল্যান্সনায়েক দীনেশ কুমার। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ৩২ বছর বয়সি দীনেশ হরিয়ানার পলওয়াল জেলার বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৪ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দুই ভাইও সেনাবাহিনীতে কর্মরত। ছেলের মৃত্যুসংবাদে ভেঙে পড়লেও, দীনেশের বাবা দয়ারাম শর্মা বলেন, “আমার ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। ওর আত্মত্যাগ গোটা জাতি মনে রাখবে।”

এই হামলার সূত্রপাত, বলা যায়, গত ১৫ দিন আগে পহেলগাঁওয়ে হওয়া একটি জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায়। সেই ঘটনার জবাব দিতে ভারত মঙ্গলবার গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামক এক সামরিক অভিযানে আকাশপথে হামলা চালায়। লক্ষ্যবস্তু ছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। তার পর থেকেই সীমান্তে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

পাকিস্তান একের পর এক গোলা বর্ষণ শুরু করে নিয়ন্ত্রণরেখার ভারতীয় অংশ লক্ষ্য করে। এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জম্মুর পুঞ্চ জেলা। শুধু বুধবার রাতেই গোলাবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন, আহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি। উরি এবং কুপওয়ারা সেক্টরেও মাঝরাতে গোলাবর্ষণের খবর মিলেছে।

ভারতও এই পরিস্থিতিতে চুপ করে বসে নেই। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সেনা ঘাঁটি এবং অস্ত্রভাণ্ডারে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে। এতে একাধিক পাক সেনার মৃত্যু এবং জখম হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে, যদিও সরকারিভাবে এর বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি থেকে সাধারণ মানুষদের সরিয়ে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ইউনিটগুলিকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। সেনার একাধিক বিশেষ ইউনিটকে মোতায়েন করা হয়েছে যেকোনও ধরণের হামলার জবাব দিতে।

নয়াদিল্লি থেকে প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, “ভারতের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যা করণীয়, তাই করা হবে। দেশের সেনাবাহিনী তৈরি রয়েছে।”

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সীমান্তে শান্তি ফেরানো কতটা সম্ভব, তা সময়ই বলবে। তবে শহিদ দীনেশ কুমারের আত্মবলিদান আবারও স্মরণ করিয়ে দিল, দেশের নিরাপত্তার মূল্য এখনও জীবনের বিনিময়ে দিতে হয়।

অপারেশন সিঁদুর: ভারতীয় প্রতিআক্রমণে মাসুদ আজ়হারের বোন-সহ পরিবারের ১০ জন নিহত

Read more

Local News