চেন্নাইয়ের জয়ে প্লে-অফের স্বপ্ন ফিকে কলকাতার!
ইডেনে বুধবার যেন হলুদ ঝড়। গ্যালারিতে ৪২ হাজার দর্শকের মধ্যে অধিকাংশই চেন্নাই সুপার কিংসের সমর্থক। মাঠে প্রতিটি চার-ছয়ের সঙ্গে গর্জে উঠছিল “সিএসকে! সিএসকে!” ধোনি মাইক হাতে নেওয়ার মুহূর্তে ইডেন যেন রূপ নেয় চিপক স্টেডিয়ামে। এমন উন্মাদনার মাঝে মাঠে যা ঘটল, তা যেন শুধুই ধোনির গল্প হয়ে থাকল।
কলকাতার হয়ে প্রথমে ব্যাট করে আন্দ্রে রাসেলের ক্যামিও-তে ১৮০ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় কেকেআর। কিন্তু সেই রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাই প্রথমে ধুঁকছিল। ১০ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট পড়ে গেলে মনে হচ্ছিল কলকাতাই হয়তো জয় পাবে। কিন্তু ১১তম ওভারে সবকিছু বদলে যায়।
বৈভব অরোরার সেই ভয়াবহ ওভার— যেখানে প্রতিটি ইয়র্কার হয়ে যায় ফুলটস, আর ডোয়াইল্ড ব্রেভিস সেই ওভারে একাই ৩০ রান তুলে নেন, মারেন ৩টি ছক্কা ও ৩টি চার। ম্যাচ ঘুরে যায় পুরোপুরি। এই এক ওভারেই কলকাতার সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
এই ম্যাচে দেখা গেল পুরনো ধোনিকে— ফিনিশার ধোনি। শিবম দুবে যখন ঝড় তোলেন, ধোনি তাঁকে স্ট্রাইক দিয়ে খেলার ছন্দ বজায় রাখেন। দুবে আউট হওয়ার পর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন ধোনি। ম্যাচ শেষ করেন নিজের কাঁধে ভর করেই। ৪৩ বছর বয়সেও তাঁর ঠান্ডা মাথার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং ফিনিশিং দক্ষতা মুগ্ধ করল ইডেনকে।
চেন্নাইয়ের জয়ে বড় ভূমিকা ছিল তাদের স্পিনারদের। নুর আহমেদ নিয়েছেন ৪টি উইকেট, রবীন্দ্র জাডেজা ১টি, আর অশ্বিন দিয়েছেন মাত্র ১৯ রান ৩ ওভারে। কলকাতার ব্যাটারদের জীবন কঠিন করে দেন তাঁরা। অথচ কলকাতার কোচিং স্টাফ নুরের জন্য আলাদা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তার পরেও তাঁর সামনে হার মানলেন রাহানেরা।
চেন্নাইয়ের এই জয় যতটা দলের, তার চেয়েও বেশি ধোনির। এই আইপিএলে ছন্দে নেই সিএসকে, এমনকি প্লে-অফের দৌড় থেকেও অনেকটাই ছিটকে গিয়েছে তারা। ধোনি নিজেও দু’দিন অনুশীলন করেননি। তবুও ম্যাচে তাঁর উপস্থিতি, নেতৃত্ব আর ফিনিশিং স্পর্শ সবকিছুকে ছাপিয়ে গেল।
অন্যদিকে কলকাতা এই ম্যাচ হারিয়ে প্লে-অফের রাস্তা অনেকটাই কঠিন করে ফেলল। রাহানের অধিনায়কত্ব নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। মইন আলিকে ২ ওভারের বেশি না করানো হোক বা ভুল সময়ে বৈভবকে বল দেওয়া— কৌশলে স্পষ্ট ত্রুটি ছিল। সেই ভুলের খেসারত দিতে হলো একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হাতছাড়া করে।
ইডেন জুড়ে হলুদ সমুদ্র আর ‘ধোনি ধোনি’ ধ্বনির মাঝে চেন্নাই যেন নিজের ঘরে ফিরে গিয়েছিল। আর কলকাতা? নিজেদের ঘরেই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলল।
অপারেশন সিঁদুর: ভারতীয় প্রতিআক্রমণে মাসুদ আজ়হারের বোন-সহ পরিবারের ১০ জন নিহত

