রান্নার ঝক্কি কমাতে তৈরি করুন পেঁয়াজ-রসুনের পাউডার!
রোজের রান্নায় পেঁয়াজ আর রসুন না হলে যেন স্বাদই জমে না! কিন্তু মুশকিলটা শুরু হয় ঠিক তখনই, যখন রান্নার আগে খোসা ছাড়ানো, কুচনো বা বাটার কাজটা করতে হয়। বিশেষ করে ব্যস্ত সময়ে বা ক্লান্ত শরীরে এই কাজগুলো করতে একেবারেই মন চায় না। তাহলে উপায়?
সোজা উপায় হচ্ছে—পেঁয়াজ ও রসুনের পাউডার তৈরি করে আগেভাগেই সংরক্ষণ করে রাখা। এতে শুধু সময় বাঁচবে না, বরং রান্নাঘরের ঝক্কিও অনেকটাই কমে যাবে। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই পাউডার অনেক দিন ভালো থাকবে এবং রান্নার স্বাদেও কমতি হবে না।
কীভাবে বানাবেন ঘরোয়া পেঁয়াজ ও রসুনের পাউডার?
১. প্রথম ধাপ: পেঁয়াজ ও রসুনের খোসা ছাড়িয়ে নিন। এরপর পেঁয়াজ পাতলা করে কেটে ফেলুন। রসুন চপারে হালকা করে কুচিয়ে নিন। খুব বেশি মিহি না হলেও চলবে।
- দ্বিতীয় ধাপ: আলাদা আলাদা প্লেটে পেঁয়াজ ও রসুন ছড়িয়ে দিন শুকাতে। কাঠ, স্টিল বা মাটির থালা ব্যবহার করলে ভালো। প্লাস্টিক এড়িয়ে চলুন। উপরে পরিষ্কার একটা পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলে ধুলোবালি পড়বে না।
- তৃতীয় ধাপ: রোদে ২-৩ দিন শুকিয়ে নিন। যখন দেখবেন পেঁয়াজ আর রসুনে আর কোনো আর্দ্রতা নেই এবং এগুলো একদম শুকিয়ে গেছে, তখন তুলে নিন।
- চতুর্থ ধাপ: শুকিয়ে নেওয়া পেঁয়াজ ও রসুনকে আলাদা আলাদা করে মিক্সারে গুঁড়ো করে ফেলুন।
- সংরক্ষণ: গুঁড়ো হয়ে গেলে কাচের এয়ারটাইট পাত্রে ভরে রাখুন। চাইলে রোদে শুকনো অবস্থায় রেখে দিন কিচেনের তাকেই। আর যদি দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে চান, তবে ফ্রিজে রাখলেও ক্ষতি নেই।
কীভাবে ব্যবহার করবেন এই পাউডার?
এই পেঁয়াজ ও রসুনের পাউডার ব্যবহার করা যায় প্রায় সব রকম রান্নায়—তরকারি, ডাল, স্যুপ, ফ্রাইড রাইস, নুডলস বা চাইনিজ রান্নায়ও দিব্যি মানিয়ে যায়। তবে মনে রাখতে হবে, এই পাউডার বাটার তুলনায় অনেক বেশি ঘন—এক চামচ পাউডার মানেই অনেকটা শক্তিশালী স্বাদ। তাই পরিমাণ বুঝে ব্যবহার করাই ভালো।
বাজার থেকে কিনবেন, না ঘরে বানাবেন?
বাজারে রসুন ও পেঁয়াজের পাউডার কিনতে পাওয়া গেলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেগুলোর মধ্যে সংরক্ষণের জন্য রাসায়নিক প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়। তাই স্বাস্থ্যসচেতনদের জন্য ঘরোয়া উপায়ে বানানো পাউডারই সবচেয়ে ভালো ও নিরাপদ বিকল্প।
সুতরাং, এখন থেকে রান্নার আগে আর প্রতিদিন পেঁয়াজ-রসুন কাটার কষ্ট নয়। একবার সময় নিয়ে বানিয়ে রাখুন পাউডার, আর বছরের পর বছর ঝটপট রান্নায় ব্যবহার করুন—স্বাদে ফারাক পড়বে না, বরং সময় বাঁচবে বহু গুণ।

